নগ্ন ছবি আর নয়: প্লেবয়
প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৫:২৪
প্লেবয় পত্রিকাটি প্রকাশনা শুরু হয় ১৯৫৩ সালে। তার পর থেকে এই পত্রিকাতে পঞ্চাশ বছরেরও বেশী সময় ধরে নগ্ন নারীদের ছবি প্রকাশিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এটি বৃহৎ কোম্পানি এবং ম্যাগাজিন ছাড়াও এরা ওয়েবসাইট এবং হোম ভিডিওর মাধ্যমে এরা ব্যবসা করছে।
মূলত অল্পবয়সী অবিবাহিত পুরুষদের পছন্দের প্রতি দৃষ্টি রেখে প্লেবয়ের ম্যাগাজিন এবং ওয়েবসাইটে সুন্দরী নারীদের নগ্ন ছবি প্রকাশ করা হয়। তবে বিবাহিত এবং বেশী বয়সের পুরুষেরাও এর আকর্ষণ এড়াতে পারেন না। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় অথবা বিবস্ত্র হবার বিভিন্ন অবস্থায় নারীদের ছবি তোলা হয়। নারীদের উন্মুক্ত স্তন, নিতম্ব এবং যোনি স্পষ্ট ভাবে দেখালেও তা হার্ডকোর পর্নো পত্রিকাগুলির মতো জোর করে দেখানো হয় না বরং স্বাভাবিকভাবে যতটুকু দেখা যায় তাই দেখানো হয়।
মজার ব্যাপার হচ্ছে নগ্ন নারী শরীর নিয়ে ব্যবসা করলেও এই কোম্পানির চেয়ারপার্সন এবং চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার একজন নারী। তাঁর নাম ক্রিস্টি হেফনার। এই নারী প্লেবয় পত্রিকার স্থাপক হিউ হেফনারের মেয়ে।
প্লেবয় ম্যাগাজিনের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই ছবি। নগ্নতা যেখানে আভিজাত্য। সময়ের নিয়মে সেই আভিজাত্যও আজ যেন ক্লিশে। যার জেরে অর্ধশতাব্দী জুড়ে স্বপ্ন দেখিয়েছে প্লেবয়, সেই আভিজাত্যই এ বার ঝেড়ে ফেলতে চলেছে পত্রিকাটি। এ বার থেকে আর নগ্নতা নয় প্লেবয়-এ, জানিয়ে দিলেন ম্যাগাজিনের অন্যতম প্রবীণ সম্পাদক কোরি জোনস। তাকে স্বাগত জানিয়েছেন প্লেবয় প্রধান হিউ হেফনার।
১৯৫৩-য় প্লেবয় ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যার প্রচ্ছদ মডেল ছিলেন মেরিলিন মনরো। প্লেবয়ের সেরা সময়ে এই ম্যাগাজিনের জন্যই কলম ধরেছেন মার্গারেট অ্যাটউড, হারুকি মুরাকামির মতো লেখকেরা। এক বাক্যে সাক্ষাত্কার দিতে রাজি হয়েছেন ম্যালকম এক্স, ভ্লাদিমির নাবোকভ, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, জিমি কার্টাররা। প্লেবয়ের প্রচ্ছদে মুখ দেখিয়েই নিজেদের জাত চিনিয়েছেন ম্যাডোনা, শ্যারন স্টোন, নাওমি ক্যাম্পবেল। ১৯৭২-এর নভেম্বর মাসের প্লেবয় সংখ্যা বিক্রি হয়েছিল ৭ মিলিয়ন কপি।
ইন্টারনেট বিপ্লবে সহজলব্ধ হয়েছে পর্নোগ্রাফি। ধীরে ধীরে গুরুত্ব, আভিজাত্য হারিয়ে প্লেবয় ম্যাগাজিনের বিক্রি এখন এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮ লক্ষে।
পত্রিকাটির মালিক পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, এখন ইন্টারনেটের কারণে নগ্নতা বিষয়টি বড্ড সেকেলে হয়ে গেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত। এছাড়া প্লেবয় টেলিভিশন চ্যানেলের ওপর তারা এখন বেশি নজর দিচ্ছে। ওয়েবসাইটের সাফল্যেই এ বার ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ থেকে নগ্নতা পুরোপুরি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্লেবয়।