মোর পাওয়ার টু ইউ, কঙ্গনা!
প্রকাশ | ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ২৩:০৯
কঙ্গনা রাণাওয়াত সুন্দরী না, কঙ্গনা রাণাওয়াত ঝরঝরে ইংরেজি বলতে পারেন না, কঙ্গনা রাণাওয়াতের কোন গডফাদার নেই। কঙ্গনা বিগ বাজেট ফিল্ম পান নি কোনদিন। তা সত্ত্বেও তিনি বলিউডের অন্যতম মাই বাপ করণ জোহরের মুখের ওপর নির্ভয়ে বলেছেন, পরিবারতন্ত্র সাকস। সেই উক্তির বিরুদ্ধে নোংরা জোক করে ব্লু ব্লাডেড নবাব অফ পতৌদি চার পাতা অ্যাপোলজি নামিয়েছিলেন, কেন জেনেটিক্যালি তিনি এবং তার ব্রিডরা উন্নততর প্রাণী! এত কিছুর পরেও কঙ্গনা একশো তিরিশ কোটির ফিল্ম একা হাতে বানানোর ক্ষমতা রাখেন।
মণিকর্ণিকাতে ইতিহাসের 'ই' অবধি নেই। প্রত্যেক ফ্রেমে আছেন শুধু কঙ্গনা। কিশোরী উচ্ছল কঙ্গনা, প্রেমিকা কঙ্গনা, যোদ্ধা কঙ্গনা, মা কঙ্গনা, এবং বউ কঙ্গনা। কিশোরী কঙ্গনা যার "ম্যায় দিখাতি হুঁ লডকিয়া কলাইয়া ক্যায়সে ঘুমাতি হ্যায়"র সামনে নানা সাহেবকে ফিকে লাগে। প্রেমিকা কঙ্গনা যে প্রেমিক স্বামীর বই উপহার পেয়ে মুগ্ধ হয়। যোদ্ধা কঙ্গনা যে "আইগিরি নন্দিনী/ নন্দিত মেদিনী" ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ হয়ে ব্রিটিশ-অসুর সংহার করে, একা হাতে ছোট কামানওয়ালা রথ টেনে নিয়ে গিয়ে তছনছ করে দেয় ব্রিটিশ সেনার চাল। মা কঙ্গনা যে দূর্গ প্রাচীর থেকে সন্তান পিঠে বেঁধে ঝাঁপ দেয় সন্তানকে বাঁচাতে। বউ কঙ্গনা যে শাশুড়ির মুখের ওপর বৈধব্য পালনে অস্বীকার করে, এবং বলে, এ দিন দেখতে কষ্ট হলে আপনার কাশী যাওয়াই সমীচীন হবে।
এ ছবি ব্যাড-অ্যাস কুইনের। খারাপ মেয়ে কঙ্গনার। যাকে সহ-পরিচালক থেকে শুরু করে সহ-লেখক হয়ে অর্ধেক বলিউড, সব্বাই পারলে নির্বাসনে পাঠাচ্ছে একা হাতে এত বড় মুভি টেনে নিয়ে যাওয়ার অপরাধে। কঙ্গনার জীবনে কুখ্যাত হৃত্বিক এপিসোডের সময় তিনি একটি ইন্টারভিউতে একটি অসাধারণ কথা বলেছিলেন। "একজন চল্লিশ বছর বয়সী পুরুষের এক্সট্রা ম্যারিট্যাল অ্যাফেয়ার হ্যান্ডেল করতে তার বাবাকে কেন স্টেটমেন্ট দিতে হয়? কান্ট হি হ্যান্ডেল দ্যাট হিমসেল্ফ?" দ্যাট ইজ কঙ্গনা এবং এই মুভিতে এ মেয়ে তা ছত্রে ছত্রে দেখিয়েছে। কারোর সাহায্য ছাড়াই কঙ্গনা বলিউডের ইতিহাসে নারী মুখ্য চরিত্রওয়ালা সবচেয়ে বড় হিট ছবি দিয়েছেন।
যারা বলছেন, কঙ্গনা তাদের যথাযথ ক্রেডিট দেন নি, তাদের জন্য করুণা রইল। ক্রেডিট কেউ কারোকে দেয় না। রোশন পরিবারের মত প্রভাবশালীর মিথ্যে অভিযোগের সঙ্গে যুঝে, করণ জোহরের মত পরিবারতন্ত্রের জয়গান করা লোকজনের মুখে সজোরে থাপ্পড় মেরে, ব্লু ব্লাডেড নবাবের জিন থিওরিকে মিথ্যে প্রমাণিত করে মান্ডির সুদূর গ্রামের এই মেয়ে প্রমাণ করেছে যে ব্যাড গার্লস টু ক্যান বি সাকসেসফুল অন দেয়ার ওউন।
আই লাভ ব্যাড গার্লস। আই লাভ কঙ্গনা। আই লাভড মনিকর্ণিকা, ফর অবভিয়াস রিজন।
ছ'দিনে ষাট কোটির ক্লাবে ঢুকে পড়া টিম মণিকর্ণিকাকে শুভেচ্ছা। মোর পাওয়ার টু ইউ, কঙ্গনা! মোর পাওয়ার টু ইয়োর স্পিরিট!
দেবশ্রী মিত্রের ফেসবুক থেকে