বাংলাদেশে #মি_টু: অভিযোগ তুললেন শিশির
প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০১৮, ১৪:০৮ | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮, ১৪:৫৩
#মি_টু এর হাত ধরে বাংলাদেশে একে একে সরব হচ্ছেন নারীরা। প্রিয়তি থেকে একে একে সরব হন সীমন্তি, আহমাউল হোসনা। এবার সে সারিতে #মি_টু লিখে পাশে দাঁড়ালেন ট্রান্সজেন্ডার নারী শিশির।
১০ নভেম্বর (শনিবার) দুপুরে নিজের ফেসবুক আইডি তাসনুভা আনান থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের একটি ঘটনা তুলে ধরেন তিনি। অভিযোগ তুলেন পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রের কর্ণধারের বিরুদ্ধে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে শিশিরের লেখাটি এখানে দিয়ে দেয়া হলো-
চাকুরী নাই, বেকার জীবন পথে পথে ঘুরছিলাম বেশ দীর্ঘ দিন। এক বড় ভাই জানালো পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রের কর্ণধার, শহিদুল ইসলাম বিজু ভাই একজন উদ্যমী নারী খুঁজছেন। তার কাজে সহযোগীতা করার জন্য। বাহ! ভাল তো আমার ও জব দরকার। পরদিন সকালে তার অফিস গেলাম দেখা করার জন্য, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আসলেন। ওনার রুমে নিয়ে গেলেন। পরিচয় কথা শুরু করলেন। আমার জন্য খাবার আনালেন। প্রয়োজনীয় কথা শেষ করে উনি আমাকে গুলশান ব্রাঞ্চ এর দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলেন। সেখানে যাওয়ার জন্য বললেন। গেলাম। আমাকে বললেন ব্রাঞ্চ কো অর্ডিনেট করতে কিভাবে সেল বাড়ানো যায়, কিন্তু সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত যারা ছিলেন তাদের বলা হলো, আমি রবীন্দ্রনাথ নিয়ে গবেষণা করবো, ব্যাপারটা কিছুই বুঝলাম না, আমায় বললেন এক আর এখানে এসে দেখি আর এক। ওনাকে বেতন এর কথা জিজ্ঞেস করলাম। অফিস ডাকলেন। গেলাম।
সেদিন শাড়ি পরেছিলাম, রুমে ঢুকলাম উনি আমাকে বসতে বললেন পাশে সোফায় কিন্তু পাশে চেয়ার খালি ছিলো। আমার প্রশংসা শুরু করলেন। আমার চোখ সুন্দর, দেখতে সুন্দরি, আমাকে ওনার ভীষণ ভাল লাগে। এরকম আর ও নানা ধরণের কথাবার্তা। উঠে বেরিয়ে যাবো তার উপায় নাই দরজা উনি অটো লক করে দিয়েছেন।
তখন কি করব বুঝতে পারছিলাম না। হাত পা শীতল হয়ে আসছিল। মাথা ঠান্ডা রেখে ওনার সাথে স্বাভাবিক কথা বলার চেষ্টা করছিলাম। বেতন এর কথা জিজ্ঞেস করলাম, উনি বললেন ১০০০০ টাকা আর বাকি ৫০০০ টাকা পারসোনালভাবে দিবেন। কথাটা শুনে মাথার মধ্যে আগুন জ্বলে উঠলো। বিজু ভাই এবার আমার পারসোনাল প্রশ্ন করলেন, কেমন ছেলে পছন্দ?? বললাম আপনার মত মধ্যবয়স্ক নিশ্চই নয়। সে আমার হাত ধরে ফেলেন।
আমার আঁকাবাঁকা আঙুল ১০ টা নাকি ১০ টা পেনিস এর সমান। আমি যেন আর কারো কাছে না যাই, বললাম ভাষা ঠিক করে কথা বলতে, তার নাকি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার মত অবস্থা, উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে জোর করে লিপ কিস করলেন। ছেড়ে দিতে বললাম, ছেড়ে দিলেন কিন্তু দরজা খুললেন না। এবার তার জিপার খুলে পেনিস বের করে বললেন ওনার সাইজ আমার পছন্দ হয় কী না, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে তিনি ঘটিয়ে ফেললেন এসব ঘটনা, এবার আর পারলাম না। এতক্ষনে সে সব বাধ ভেঙে ফেলেছে। বললাম দরজা না খুললে আমি চেঁচাব। আপনি যদি আমায় রেপ করেন তাহলে এমনভাবে করেন যেন আমি মরে যাই আর যদি সেটা না হয় তাহলে আমায় সসম্মানে যেতে দেন।
ইচ্ছা করছিলো লোক টাকে কুত্তার মত পিটাই। কিন্তু যার পরিচয়ে সেখানে গেলাম শুধু মাত্র তার সম্মানের কথা ভেবে চুপ করে হজম করলাম। উনি দেখলাম একটু ভয় পেলেন। তারপর দরজা খুলে দিলেন বের হয়ে আসলাম।
[ট্রান্সজেন্ডার নারী তাসনুভা আনানের সেই ফেসবুক স্টাটাসটি। তাসনুভার ফেসবুকে পুরো লেখাটি দেখতে চাইলে ছবির উপর ক্লিক করুন]