সন্তানকে মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিন
প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৬, ২২:৩০
জঙ্গিদের জানাজায় কেউ যায়নি দেখে বাঙালিকে বাহবা দিলেন, জঙ্গিদের গালি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন, নিজেকে বিরাট মানবতার লোক ভেবে তৃপ্তি পেলেন। এবার নিজেকে জঙ্গিদের বাবা-মার জায়গায় বসান। কেমন লাগছে? কেমন লাগছে নিজেকে সেই সন্তানের বাবা-মা বা ভাইবোন ভাবতে যে নিরীহ মানুষের গলায় নির্লিপ্তভাবে ছুরি চালিয়ে দিতে পারে, জিপিএ ফাইভ পাওয়ার আনন্দে যেভাবে ইয়াহু বলে সেভাবেই ‘আল্লাহু আকবর’ বলে উল্লসিত হতে হতে মানুষের গলা দুই ফাঁক করে দেয় বা কোনো গর্ভবতী মা’কে পরম আক্রোশে হত্যার পরেও কুপিয়ে যায়?
আমি জানি আপনার ভালো লাগছেনা। অসুস্থ বোধ হচ্ছে। কিন্তু এরকম হতে পারে আপনার বেলাতেও যদি না আপনি সচেতন হন। এপ্লাসের নেশায় কাড়ি কাড়ি টাকা ইনকাম করে প্রাইভেট আর কোচিংয়ে না ঢেলে খোঁজ নিন সেই টাকা কোথায় ব্যয় হয়, কার সাথে মেশে আপনার সন্তান, কোথায় যায়। বড় অঙ্কের একটি টাকা হাতে না তুলে দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডার আয়োজন করুন আপনারই বাসায়, সময় করে নিন সন্তানকে নিয়ে কোথাও ঘুরে আসার, প্রকৃতি দেখার। হাতে আউটবই তুলে দিন। আউটবই লিখে যারা বিখ্যাত হয়েছেন সেইসব লেখকদের ভাবনাগুলো জানুক আপনার সন্তান। মানবতার প্রথম পাঠ পেতে আপনার সন্তানকে সাহায্য করুক মানিক, বিভূতি, হুমায়ূন আহমেদ, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, এরিক মারিয়া রেমার্ক, জহির রায়হানরা। আউটবই পড়ে কিন্তু কেউ অমানুষ হয়না!
ক্যারিয়ার ক্যারিয়ার করে মাথা না খেয়ে সন্তানকে মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিন আগে। নিজের পেশা সে নিজেই খুঁজে নেবে। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার অনেক হওয়া যাবে, কিন্তু অমানুষ হয়ে গেলে মানুষ বানানোর সুযোগ আপনার হাতে নাও থাকতে পারে। যাকে ডাক্তার হওয়ার জন্য মাথা খাচ্ছেন সে কসাই হয়ে মানুষের গলা কাটলে কি আপনার ভালো লাগবে?
জান্নাতুন নাঈম প্রীতি’র ফেসবুক থেকে