সব সন্তানই বড় হোক সমমর্যাদায়
প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:৩৮
অনেক আলোচিত বড় ছেলে নাটকটি দেখলাম একটু দেরীতেই। অনেক ইমোশন নিয়ে যে বড়ছেলে নাটকটি তৈরী হয়েছে তা শুধু আমাদের মতো ইমোশনাল দর্শকেরকেই আপ্লুত করে। আমরা হলাম ইমোশনাল জাতি। বাস্তবতা দিয়ে কোন কিছুই বিচার করি না।
আমরা কিছু নিয়ম তৈরী করেছি। কিন্তু এই যুগে এসব নিয়ম বদলে সময়ের প্রয়োজনীয়তার নিরীখে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ম তৈরী করা উচিত।
ছেলে হলে তাকে বড় করে, পড়ালেখা শিখিয়ে, নিজের সব সহায়-সম্পত্তি দিয়ে, নিঃস্ব হয়ে তার সাথে বাকি জীবন কাটানো হচ্ছে আমাদের নিয়ম। মেয়ে হলে তাকে কোনরকম লেখাপড়া শিখিয়ে, কিছু গয়না গাটি দিয়ে, কোন সম্পত্তি না দিয়ে বিয়ে দিয়ে বিদেয় করাই আমাদের নিয়ম। যেহেতু ছেলেকে সবচেয়ে বেশি সুযোগ দিয়ে, পড়াশোনা করানো হয়, সবকিছু দিয়ে দেয়া হয়, অতএব পিতা-মাতারা ছেলের সংসারে তার সন্তান এবং স্ত্রীর দুর্ব্যবহার সহ্য করে বাকী জীবন পার করবে এটাই আমাদের নিয়ম।
বৃদ্ধ বাবা-মা মেয়ের বাড়িতে থাকলে, মেয়ের উপার্জিত অর্থ নিলে একে ভীষণ লজ্জা হিসেবেই ধরা হয় আমাদের সমাজে। মেয়ের কাছ থেকে কিছু নেয়া লজ্জা কারণ মেয়েকে তো কিছুই দেয়া হয় না। তবে আমার মনে হয়, যদি মেয়েরাও সমানভাবে সব কিছুরই ভাগ পায়, তাহলে তো তার কর্তব্য হবে পরিবারের দায়িত্ব নেয়া। তখন মেয়ের কাছ থেকে কিছু নেয়া বাবা-মার জন্যও লজ্জার হবে না।
আমরা বড় ছেলেকে প্রিভিলিজ দিয়ে তাকে সব সুযোগ দেই। তার চেয়ে মেয়েদের ছেলেদের সমান সুযোগ এবং সম্পত্তি দিলে তারাও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দায়িত্ব নেবে এমন মূল্যবোধ তৈরী করি। শুধু বড়ছেলে নয় সব সন্তানই বাবা-মা যদি সমমর্যাদায় বড় করেন তাহলেই আমরা শুধু ইমোশনের অবাস্তব জগত থেকে বাস্তবতায় ফিরে আসতে পারবো।
আসুন ছেলের জন্য সব কিছু খরচ করে নিঃস্ব হয়ে না যাই।
বৃদ্ধ বয়সে নিঃস্ব না হয়ে নিজেদের জন্য কিছু রাখি, যাতে সন্তানের মুখাপেক্ষি হতে না হয় অন্তত।
জাগরণীয়ার ইমেইল থেকে