সনাতনী কন্যার কন্যাদান করলেন মুসলিম প্রতিবেশী
প্রকাশ | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:৩৭
মাস তিনেক হয় আমার প্রতিবেশী পুলিন শীল মারা গিয়াছে। যখন খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন তার ছেলে লিটন শীলকে দিয়ে আমাকে ডেকে এনে বলে "দিদার আমার মেয়েটির বিবাহের দায়িত্ব তোকেই দিয়ে যাচ্ছি ,আমার পরিবর্তে তুই কন্যা দান করিস ভাই"।
সেই হতে দায়িত্বটা আমি নিলাম। আজ কন্যা দানের লগ্ন। ব্রাহ্মণের মন্ত্র পাঠান্তে মেয়েটিকে সমর্পণ করে দিলাম। কন্যা দান একজন বাবার জন্য যে কত ব্যথার এবং করুণার আমি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করিলাম। রিকা শীল যখন কাকু বলে ডুকরে কেঁদে উঠল তখন চোখের পানি ধরে রাখা কঠিন হয়ে উঠে মনে হয় একটা বিষ মাখা তীর আমার বুকটা এফোঁড় ওফোঁড় করে দিল।
রিকা শীল আমার পাড়ার সবথেকে চঞ্চল ও সরল মেয়ে। যখনই দেখা হত কাকু বলে ডাক দিত। যে দিন তার বাবা মারা যায় সেই দিন থেকে মেয়েটি কেমন জানি শান্ত হয়ে যায়। করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। বাবার মৃত্যু মেয়েটিকে প্রচন্ড আঘাত দেয়।
বিয়ের কথা বার্তা ঠিক হলে তাকে জিজ্ঞাসা করিলাম মা এই বর কি তোমার পছন্দ? রিকা এক কথায় জবাব দিল কাকু তোমাদের পছন্দই আমার পছন্দ। আরো বলে কাকু বাবার প্রতিজ্ঞা মতো তোমাকেই কন্যা দান করতে হবে।
আজ আমি অশ্রু জড়িত চোখে আমার কন্যা দান করিলাম এক নব জীবন গড়ার মানসে। সুখী হউক রিকা শীলের দাম্পত্য জীবন, স্বর্গবাসী হউক তার বাবা। এই এক নতুন এবং করুণ অভিজ্ঞতা আমার।
-১ নভেম্বর ২০১৬
দিদার আলমের ডায়েরি থেকে [দিদার আলম, বাঁশখালী, চট্রগ্রাম]