নারী হয়ে জন্মাবার দায় কি তার?
প্রকাশ | ৩১ আগস্ট ২০১৭, ২০:১৫
নারী ঘরে বাইরে কোথাও কি নিরাপত্তা পাবে না? প্রতিদিন কিছু না কিছু ঘটেই যাচ্ছে। অথচ আমাদের সমাজে কয়টা ঘটনা আমরা জানতে পারি সত্যিকারভাবে? আজ আবার সবাই সোচ্চার টাঙ্গাইলের বাসে রূপার গণধর্ষণ আর হত্যাকান্ড নিয়ে।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয় তনু হত্যাকান্ড নিয়ে তোলপাড় যে হয়েছে। বনানীর হোটেল বিষয়ে ধর্ষকদের বাবার ব্যবসা বন্ধ নাটক। এ দেশে যারা প্রতিবাদ মুখর হন তারা বলতে পারেন রেপ কেসগুলো থানা আদালত হয়ে কি হয়েছে এখন?
একজন নারী যখন সম্ভ্রম হারায় তখন শুধু সে নয় তার গোটা পরিবারকে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে বলে 'এ ঘরের মেয়েকে মানুষ নষ্ট করছে' কিন্তু সে পরিবার তখন প্রতিবাদের বদলে লজ্জাবনত হয়ে পথ চলে। একটি রেপ কেস হয় পত্রিকার খবর। ফেবুতে তুলে পোস্টের ঝড়। তবে কেউ বলতে পারে না কতটা হেয় হয় ধর্ষিতা নারীর পরিবার।
এ তো গেলো প্রকাশিত ধর্ষণ এর ঘটনা। কিন্তু যে স্বামীটি সহবাসের নামে একজন স্ত্রীর উপর শারিরীক মানসিক অত্যাচার করে তার প্রতিকার নেই, আছে শুধু চোখের জল। এমন মেয়েদের শুনতে হয় বাপের বাড়ি স্বামীর বাড়ি নামক যুক্তিহীন প্রলাপ 'মেয়ে যতই কর্মক্ষম হোক স্বামীর ঘর ছাড়া যাবে না। কারণ মেয়ের দায় পরিবারের সম্মান রক্ষা করা। সে সংসার না করলে পরিবারের সম্মান থাকবে না।'
নারীর নিরাপত্তা লুণ্ঠিত হয় কাজের ক্ষেত্রে যা অনেকভাবে অপ্রকাশিত। জীবনের প্রয়োজনে কত নারীর জীবনের না বলা কথা চোখের জলে ভাসে তার খবর কেউ রাখে না। ভারতের রাম রহিমের ঘটনা দেখে এ দেশে অনেক নারী শিকল ভাঙতে হয়ত চায় কিন্তু সমাজ আর লোক নিন্দা ভয়ে পারে না ভন্ড পীরের মুখোশ খুলে দিতে।
একজন কর্মজীবী নারী হিসাবে কাজের প্রয়োজনে সময়ের হিসাব করে রাস্তায় পথ চলা যায় না। আজ যে ধর্ষিত হয়েছে তাকে প্রমান করতে হচ্ছে সে মানুষ রূপী হায়েনার কাছে 'সম্ভ্রম' হারিয়েছে। তথাকথিত মানুষের কাছে পুরুষের লালসার শিকার ধর্ষিত নারীটিই 'সম্ভ্রমহীন'। কিন্তু প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া এসব ঘটনা থেকে আরেক নারী নিজে যে এমন অবস্থার শিকার হবে না তার নিশ্চয়তা দিতে পারে না রাষ্ট্র। কারন দেশের আইনী প্রক্রিয়ায় এ বিষয়ে রয়েছে যথেষ্ট দুর্বলতা।
এক মা হিসাবে মাঝেমাঝে মনে হয় ছুটে চলা জীবনে ঘরে যে কন্যা সন্তান নেই এই ভালো।
হাসিনা নিগার এর ফেসবুক থেকে