একদিন স্বপ্নের দিন

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:১১

জাগরণীয়া ডেস্ক

সুন্দরভাবে জীবনে বাচঁতে হলে সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখতে হয়। কিন্তু সেই স্বপ্ন যদি পূরণ না হয় তাহলে পরিপূর্ণ জীবন পাওয়া যায় না। তাই সবারই স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে। আর এমনই দেশের প্রতি ভালোবাসা, সম্মান আর ভালো কিছু করার গুরুত্ব বুঝার মধ্য দিয়ে দিনভর আনন্দ- বিনোদন উপভোগ করে দিনটা অতিক্রম করা। প্রকৃতির সুন্দর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা। ভালো ভালো খাবার খাওয়া। নাচে আর গানে মানুষকে মাতিয়ে তুলা। ঘুরতে যাবে। বাসে চড়বে। সবাই দৌড়াদৌড়ি করবে। স্বাধীনভাবে খেলা করবে। যা তারা কোনোদিনও ভাবতে পারিনি যে এমন একটা দিন তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের কাছে দিন যেন একটি স্বপ্নের দিনের মতো।

সারাবিশ্বে যুদ্ধ, দারির্দ্য, পুষ্টিহীনতা ও প্রাণঘাতী রোগ শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত করছে। বাংলাদেশের শিশুরাও ভালো অবস্থায় নেই। প্রায় ৫০ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে বাংলাদেশে যারা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসাসহ সব ধরনের মৌলিক প্রয়োজন থেকে বঞ্চিত। অভাবের তাড়নায় তারা রাস্তায় পাথর ভাঙে, গার্মেন্টে কাজ করে, ঠেলাগাড়ি চালায়, কাগজ কুড়ায়, পার্কে ফুলের মালা বিক্রি করে এমনকি এ বয়সেই চুরি করছে ও পকেট মারার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এরা কোনো মতে খেয়ে পরে বাঁচতে পারলেই তারা খুশি হয়। এসব শিশু ভালোভাবে বেড়ে ওঠার কোনো স্বপ্ন দেখে না বা দেখতে জানে না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) নবজাগরণ ফাউন্ডেশন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৬০ জন স্বেচ্ছাসেবী ১ জন করে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে সারাদিন ঘোরে। দেশের হতে যাওয়া কর্ণধারদের সঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের মেলবন্ধন সৃষ্টিও তাদের একটি উদ্দেশ্য।

জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় নবজাগরণ ফাউন্ডেশন কতৃক শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘একদিন স্বপ্নের দিন’। প্রতি দুইজন স্বেছাসেবক এর দায়িত্বে একজন করে সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে দেওয়া হয় তার দিনটাকে স্বপ্নের মতো করে উপহার দেওয়ার জন্য। এরপর সদলবলে যাওয়া হয় চিড়িয়াখানায়। বিভিন্ন মজার মজার খেলার মাধ্যমে তাদেরকে আনন্দ দেওয়া হয়। শিশুদের বিভিন্ন রাইড এ চড়ানো হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথীর বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা ও সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাদেকুল আরেফিন মাতিন বলেন, শিশুদের মৌলিক অধিকার যথাযথ ভাবে পূরণের মাধ্যমেই গড়ে উঠবে সোনার বাংলা। আর তারই অংশ হিসেবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জীবনমান উন্নত করার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে নবজাগরণ ফাউন্ডেশন।

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কনসার্ট এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে কিছু স্বপ্নবাজ তরুণের হাত ধরে যাত্রা হয় নবজাগরন ফাউন্ডেশনের। যার সকল সেচ্ছাসেবক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ২০১৪ সালে নবজাগরণ বিদ্যানিকেতন নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। যেখানে পথশিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে শিশুদের পরিবারে গিয়ে তাদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত