মিরপুর-মাদারগঞ্জ প্রতিরোধ যুদ্ধ দিবস আজ
প্রকাশ | ১৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৩:০১ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৩:০৪
১৭ এপ্রিল (সোমবার) গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার মিরপুর ও মাদারগঞ্জ প্রতিরোধ যুদ্ধ দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার মীরপুর ও রংপুর জেলার পীরগঞ্জে পাক সেনাদের সঙ্গে মুক্তিসেনাদের সম্মুখ যুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এই দিনে পাক সেনারা রংপুর থেকে বড় দরগাহ হয়ে ধেয়ে আসে মাদারগঞ্জ বন্দরে।
মুক্তিসেনারা মাদারগঞ্জ ও মীরপুর বন্দরের সীমানার মধ্যবর্তী স্থানে নলেয়া নদীর সেতুর পূর্ব পাশে ব্যারিকেট সৃষ্টি করে। এ খবর পেয়ে পাক সেনারা মাদারগঞ্জ মাদ্রাসা ও আশপাশ এলাকায় অবস্থান নেয়। ওইদিন ভোর ৬টার দিকে পাকবাহিনীর সদস্যরাও রাইফেল, মেশিনগান, স্টেনগান ও বন্ধুকসহ ভারি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান নেয়।
এদিকে আলতাব সুবেদারের নেতৃত্বে এলাকার মুক্তিসেনারা মাদারগঞ্জ-মীরপুর নলেয়া নদীর সেতুতে ব্যারিকেট সৃষ্টি করে সেতুটি ভেঙে দেয়। ফলে পাকসেনাদের খাদ্যবাহী ট্রাক ভাঙা সেতুস্থলে আটক করে রাখে তারা। এতে উভয়ের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। প্রায় ৯ ঘণ্টার যুদ্ধে শহীদ হন বাবু শিরিশ চন্দ্র সাহা, হামিক উদ্দিন ও সুর্য চৌকিদারসহ তিন ব্যক্তি। এবং আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। ভষ্মীভূত হয় প্রায় ৫০ পরিবারের বাড়ি-ঘর, গ্রাম ছাড়া হয় হাজার হাজার মানুষ। ফলে স্থানীয় মুক্তিসেনাদের কৌশলি যুদ্ধে এক পর্যায়ে পাকসেনারা দিশাহারা হয়ে পড়ে।
এরপর মুসলিম লীগ, পিডিপি, জামায়েতের মুখচেনা কিছু লোক বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার বিপক্ষে মিছিল করেছিল। তারাই মাদারগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এলাকার হাসানপুর, একবারপুর, বড়দাউদপুর ও মীরপুরসহ আশপাশের প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ প্রাণ ভয়ে ছুটছুটি করে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেয়।
মুক্তযোদ্ধাদের স্মরণে মিরপুর-মাদারগঞ্জের নলেয়া ব্রীজের পূর্ব পাশে নির্মিত হয় একটি তোরণ। যা মিরপুর-মাদারগঞ্জ প্রতিরোধ যুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে রয়েছে। তবে আজও অনেকে প্রতিরোধ যুদ্ধের সেই ভয়াল দিনকে স্মরণ করে বেঁচে আছেন।
দিবসটি যথাযথভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে প্রতিবছর স্মরণসভার আয়োজন করে স্থানীয়রা। এবারেও দিবসটি পালনে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।