প্রতিরোধের মার্চ
১৯৭১ এর উত্তাল ১৭ মার্চ
প্রকাশ | ১৭ মার্চ ২০১৭, ১৪:৪৮
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সকাল ১০টায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। কড়া সামরিক প্রহরার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে এই বৈঠক শুরু হয়। এদিন বৈঠক প্রায় ১ ঘন্টাব্যাপী চলে। প্রথম দিনের মতই আলোচনা শেষে অপেক্ষমাণ দেশী-বিদেশী সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু বলেন, আলোচনা এখনও শেষ হয়ে যায় নি। আলোচনা চলছে। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনও চলবে।
বঙ্গবন্ধু তাঁর ধানমন্ডির ৩২ নং এর বাসভবনে পৌঁছলে দেশী-বিদেশী সাংবাদিকদের অনুরোধে তিনি তাঁদের সাথে এক ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হন। জন্মদিনে তাঁর কামনা কি, জনৈক বিদেশী সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু জন্মদিনের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন- “আমার জীবনের সবচেয়ে বড় কামনা জনগণের সার্বিক মুক্তি।” সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমি আমার জন্মদিন পালন করি না। এই দুঃখিনী বাংলায় আমার জন্মদিনই কী বা মৃত্যুদিনই বা কী? আমার আবার জন্মদিন কী? আমার জীবন নিবেদিত জনগণের জন্য।”
ইয়াহিয়া খান বাংলার মাটিতে পা দিয়েই বুঝে ফেলেছেন বাংলার স্বাধীনতা অনিবার্য- কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের তার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে নির্দেশ দিচ্ছেন, বাংলার সব মানুষ তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে। তাই ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের উর্ধতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণের পথ বেছে নেন। প্রতিটি বৈঠকেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রশ্নে ছিলেন আপোসহীন।
সময় ও কালক্ষেপনের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিদিন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সৈন্য ও অস্ত্র-গোলাবারুদ আসতে থাকে পূর্ব-পাকিস্তানে এবং পাকিস্তানি সামরিক সরকার পূর্ববাংলায় দমননীতি ও ব্যাপক গণহত্যার জন্য নীলনকশা আঁকতে থাকে।