মানিকগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ
প্রকাশ | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৪৯ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৫:৫১
৪২টি ছোট-বড় যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ হানাদার বাহিনীর দখল মুক্ত হয়।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের খবর শোনার পরই মানিকগঞ্জের রাজনৈতিক নেতারা গঠন করেন সাত সদস্য বিশিষ্ট বিপ্লবী পরিষদ। পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল হক চাঁন মিয়াকে।
পরিষদের অন্য সদস্যরা হলেন- মোসলেম উদ্দিন খান হাবু মিয়া, ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল হালিম চৌধুরী, খন্দকার দোলোয়ার হোসেন, সৈয়দ আনোয়ার আলী চৌধুরী, মীর আবুল খায়ের ঘটু ও মফিজুল ইসলাম খান কামাল। পরবর্তীতে তাদের নেতৃত্বে মানিকগঞ্জে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করা হয়।
২৬ মার্চ ক্যাপ্টেন হালিম চৌধুরীর নেতৃত্বে মানিকগঞ্জে তালা ভেঙে অস্ত্র লুট করে তা বিতরণ করা হয় ছাত্র-জনতার মাঝে। ক্যাপ্টেন হালিম চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেন। মানিকগঞ্জ সিঅ্যান্ডবির ডাক বাংলো ছিল পাক হানাদার বাহিনীর জেলা সদরদপ্তর। এখান থেকে হানাদার এবং তাদের দোসররা নিধনযজ্ঞ পরিচালনা করত। আর মূল ব্যারাক ছিল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পিটিআইয়ের মূল ভবনে।
১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জে চূড়ান্ত বিজয় হলেও আগে থেকে বিভিন্ন উপজেলা ছাড়তে থাকে হানাদার বাহিনী। শত্রুমুক্ত হওয়ার পর ১৩ ডিসেম্বর বিজয়ী বেশে মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে সমবেত হন। আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল হক চাঁন মিয়া ওই দিন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।
মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন জানান, জেলার সবচেয়ে বড় যুদ্ধ হয়েছিল গোলাইডাঙ্গায়। ওই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর ব্রাশ ফায়ারে নিহত হয়েছিল ৮১ জন পাক সেনা। ওই যুদ্ধটি ঐতিহাসিক গোলাইডাঙ্গা যুদ্ধ নামে পরিচিত।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন লুডু জানান, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মানিকগঞ্জে শহীদ হন ৫৪ জন মুক্তিযোদ্ধা। পঙ্গু হন নয়জন। যুদ্ধে অবদানের জন্য খেতাবপ্রাপ্ত হন চারজন মুক্তিযোদ্ধা। তারা হলেন- স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) বদরুল আলম (বীর প্রতীক), ইব্রাহীম খান (বীর প্রতীক), শহীদ মাহফুজুর রহমান (বীর প্রতীক) এবং মোহাম্মদ আতাহার আলী খান (বীর প্রতীক)। তাদের মধ্যে আতাহার আলী জীবিত আছেন।