‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’
প্রকাশ | ১৪ এপ্রিল ২০১৮, ১২:৩০
জরাজীর্ণ পুরাতনকে সরিয়ে নতুনকে বরণ করে নেয়ার প্রয়াসে এবং সেই সাথে মানবতাবোধ আর সকলের মঙ্গল কামনায় প্রতিবছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রা।
লালন সাঁইজির গান থেকে নেয়া ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’- এবারের বাংলা নববর্ষ ১৪২৫ সনের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য। এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনে নেতৃত্ব দিয়েছে চারুকলা অনুষদের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। সকাল ৯টায় শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি রূপসী বাংলা, শাহবাগ ও টিএসসি মোড় ঘুরে ফের চারুকলার সামনে গিয়ে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শেষ হয়।
বরাবরের মতো এবারও সকাল থেকেই টিএসসি, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষ জড়ো হতে থাকে। ৯টার মধ্যেই পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। লাল-সাদা পোশাকে উচ্ছল নারীদের মাথায় শোভিত নানান রঙ্গের ফুলের টিয়ারা। তরুণদের পরনে ছিল লাল-সাদাসহ নানা রঙের পাঞ্জাবি। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের প্রতীকী উপস্থাপনের নানা বিষয় স্থান পেয়েছে। যেমন-বিশাল আকৃতির মহিষ, টেপা পুতুল, সূর্য, বক, মাছ। রাজা-রানীসহ নানা আকৃতিক রং ও মুখোশ ছিল শোভাযাত্রায়। এছাড়াও রঙিন মা পাখি ও ছানার প্রতীকী কাঠামো দেখা গিয়েছিল।
শোভাযাত্রায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন।
মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছিল পুলিশ। সাথে ছিলেন র্যাব ও সোয়াত সদস্যরা। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর ছিল। আকাশে হেলিকপ্টারে ছিল র্যাবের টহল।
বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু হয়েছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা। ৩ দশক ধরে আয়োজিত এই মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবেল কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে ২০১৬ সালে।