গর্ভাবস্থায় ভুল ধারণা
প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:২৩
গর্ভাবস্থায় যেমন আশা থাকে, তেমন থাকে আশঙ্কা। নতুন অভিজ্ঞতার উত্তেজনার পাশাপাশি অনাগত সন্তানের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াও পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের নানা সাজেশন মেনে চলেন। যার মধ্যে রয়েছে কিছু ভুল ধারণা। চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
পেটের আকার দেখে বোঝা যায় যে, ছেলে হবে না মেয়ে
গর্ভাবস্থায় পেটের আকার কেমন হবে সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। যেমন গর্ভস্থ সন্তানের আকার, মায়ের শারীরিক গঠন, মায়ের গর্ভে সন্তানের অবস্থান এবং ইউটেরাসে কতটা ফ্লুয়িড আছে। এর সঙ্গে গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের কোনো সম্পর্ক নেই।
হোঁচট বা ধাক্কা লাগলে সন্তানের ক্ষতি
হাঁটতে হাঁটতে সামান্য হোঁচট খেলে বা ধাক্কা লাগলেই গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে, এমন ধারণা একদমই ভুল। সন্তান গর্ভে এক ধরনের ফ্লুয়িডের মধ্যে থাকে। এই ফ্লুয়িডই গর্ভস্থ সন্তানকে সব রকম ছোটখাটো আঘাত থেকে রক্ষা করে। তাই সামান্য হোঁচট খেলে বা একটু ধাক্কা লাগলেই অনাগত সন্তানের ক্ষতি হয়ে যায় না।
গর্ভস্থ সন্তান মেয়ে হলে মায়েরা দেখতে সুন্দর হয়, আর ছেলে হলে সৌন্দর্য কমে
মায়ের সৌন্দর্য বাড়া বা কমা কখনোই গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে না। যেহেতু গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বেশি হয় এবং প্রথম অবস্থার অস্বস্তিগুলো কমতে শুরু করে। এই সময় যেকোনো গর্ভবতী নারীই আগের চেয়ে একটু বেশি রিলাক্সড থাকেন। এছাড়া মা হওয়ার আনন্দ ভেতরে তখন কাজ করতে থাকে। যেহেতু সব মা-ই একটু বেশি আনন্দে থাকেন, তাই সেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটে চেহারায়। মানে চেহারা আগের চেয়ে উজ্জ্বল হয়।
জাফরান দেওয়া দুধ, কমলা, ডাবের পানি খেলে গর্ভস্থ সন্তান ফর্সা হবে
অনেকেই বলেন গর্ভাবস্থায় জাফরান দেওয়া দুধ, কমলা বা ডাবের পানি খেলে গর্ভস্থ সন্তানের গায়ের রঙ নাকি ফর্সা হয়। আবার কেউ কেউ মনে করেন আয়রন সাপ্লিমেন্ট খেলে নাকি গর্ভস্থ সন্তান কালো হয়। এই ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং এসব ধারণা বিশ্বাস করে যদি আয়রন সাপ্লিমেন্ট না খাওয়া হয়, তাহলে মায়ের অ্যানিমিয়া হয়ে যেতে পারে, বাড়তে পারে নানা জটিলতা। সন্তানের গায়ের রঙ কেমন হবে তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে জিনের ওপর, যা আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পেয়ে থাকি।
ঘুমানোর পজিশনের ওপরে ডেলিভারি নির্ভর করে
অনেক সময় গর্ভবতী নারীদের কোনো একটি বিশেষ দিকে ফিরে ঘুমাতে বলা হয়। এইসব ধারণা একেবারেই ভুল। যে পজিশনে ঘুমালে মা এবং গর্ভস্থ সন্তান দুজনেই স্বস্তি পান, সেভাবেই ঘুমানো উচিত। তবে আট মাস থেকে চিত হয়ে না ঘুমানোই ভালো। কারণ ওই সময় ইউটেরাস ডানদিকে ঘুরতে শুরু করে। এছাড়া বাচ্চার শরীরে রক্ত সাপ্লাই কমে যায়। তাই এই সময়ে বাঁদিকে বা ডানদিকে ফিরে ঘুমানোই ভালো।