ওরাল সেক্স মানেই কি ক্যান্সার?
প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০১৭, ১৯:৫৫
মুখ বা গলার ক্যান্সারের কারণ লুকিয়ে রয়েছে ওরাল সেক্সের অভ্যাসে। ধূমপানকে পিছনে ফেলে কর্কটরোগের অন্যতম কারণ হিসাবে উঠে আসছে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস, সংক্ষেপে এইচপিভি।
‘মদ-সিগারেটের নেশা নয়, গলার ক্যান্সারের জন্য দায়ী ওরাল সেক্সের প্রতি আমার অতিরিক্ত আসক্তি।’ কর্কটরোগ ধরা পড়ার পর এক সাক্ষাত্কারে অকপট হয়েছিলেন হলিউড অভিনেতা মাইকেল ডগলাস। ‘বেসিক ইনস্টিংক্ট’ ও ‘ফেটাল অ্যাট্রাকশন’-এর মতো সুপারহিট ছবির নায়ক জানিয়েছিলেন, ২০১০ সালে তাঁর জিভের নীচে আখরোট আকৃতির টিউমার বায়োপসি করার পর স্টেজ ফোর ক্যান্সার ধরা পড়ে। ডগলাস স্বীকার করেছেন, যোনিলেহনের মাধ্যমে যৌন রোগের হাত ধরে তাঁর মুখগহ্বরে বাসা বাঁধে মারাত্মক এইচপিভি, যা যোনির, মুখের ও গলার ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতে, গত প্রায় এক দশক জুড়ে বিশ্বব্যাপী যৌন অভ্যাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে, আসক্তি বেড়েছে ওরাল সেক্সের প্রতি। এই কারণে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে এইচপিভি। তাঁদের মতে, শরীরের ভিজে অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। নিরাপত্তাহীন যৌনতার জেরে তাই মুখ, পায়ু, যোনি ও গলায় এইচপিভি সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। জানা গিয়েছে, এই ভাইরাস প্রবল সংক্রমণাত্মক এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
বহুদিন ধরে মুখের ঘা না-শুকানো, মুখের কোনও অংশে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথা অনুভব করা, মুখগহ্বরে ও গলার ভিতর সাদা বা লাল ছোপ, ঢোক গিলতে অসুবিধা, গলায় কোনও দলা তৈরি হওয়া, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ অথবা বিশেষ কোনও কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ওজন হ্রাস পাওয়া-এই সবই মুখ কিংবা গলার ক্যান্সারের উপসর্গ।
চিকিত্সকদের পরামর্শ, ওরাল সেক্স করতে গেলেও কন্ডোম ব্যবহার আবশ্যিক। এর ফলে মুখ ও পুরুষাঙ্গের মাঝে একটি আড়াল বজায় থাকে। আবার যোনির উপর ল্যাটেক্স-এর বর্গাকৃতি টুকরো ব্যবহার করেও এইচপিভি সংক্রমণের থেকে রেহাই মেলে।
অক্সপোর্ড অনলাইন ফার্মেসি’র চিকিত্সক হেলেন ওয়েবারলি জানিয়েছেন, ‘আমরা জানি বেশ কিছু যৌনাঙ্গের ক্যান্সার যেমন ভালভ্যাল, সার্ভিক্যাল, পেনাইল এবং অ্যানাল ক্যান্সারের সঙ্গে ওয়ার্ট অর্থাত্ ক্যান্সারবাহী ওয়ার্ট (আঁচিল) ভাইরাসের যোগসূত্র থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই মুখের ক্যান্সারের পিছনেও এই ভাইরাসের অবদান সম্ভব।’ প্রতিষেধক হিসাবে ওরাল সেক্স-এর সময় কন্ডোম অথবা মুখে নিরাপত্তার আড়াল তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সূত্র: এই সময়