রমজান মাসে ডায়েট নিয়ে কিছু টিপস

প্রকাশ : ০৯ জুন ২০১৭, ০১:৫২

জাগরণীয়া ডেস্ক

রমজান মাসে ডায়েট নিয়ে যারা চিন্তিত তারা কিছু আইডিয়া নিতে পারেন। প্রথম কথা হল রমজান মাসটা খুব ভালভাবে পালন করতে হবে। নইলে ওজন কিছু না কমে উল্টা ৪-৫ কেজি ওজন বেড়ে যাবে। রমজান মাসে ডায়েট মানে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে বডির মেটাবলিজম রেট (ক্যালরি বার্ন প্রসেস) স্লো হয়ে যায়। অল্প সময়ে বেশি খাবার হজম করার শক্তি শরিরে থাকে না। তখন তা স্টোর হয়ে যায়। তাই কোন মতেই বেশি খাওয়া যাবে না। এখন আপনি নির্বোধের মত বেহিসাবী হয়ে খেলে মোটা হবেন তা নিশ্চিত। তাই রমজান মাসে ডায়েট নিয়ে কিছু টিপস।

সেহরি :
সেহরি খাবার ২০ মিনিট আগে ১/২ লিটার পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মেশাবেন। কুসুম গরম পানিতে খেলে ১ গ্লাসে মেশালেও হবে। সেহেরিতে মিনিমাম ১ লিটার পানি খাবেন। কারণ পানি খুব জরুরী আপনি সারাদিন পানি খাবেন না। আর পানি খুবই জরুরী আপনার বডি প্রপারলি কাজ করার জন্য। লেবু খাবেন, কারণ এরপর আপনি যা খাবেন তা হজমে সাহায্য করবে এবং খাবারের পুষ্টিগুন শোষনে সাহায্য করবে। আর লেবু পানি ওজন কমাতেও সাহায্য করে। কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খাবার চেষ্টা করবেন। লেবু পানি আপনাকে সারাদিন হাইড্রেটেড থাকতে সাহায্য করবে। 
সেহরিতে সবসময় কমপ্লেক্স কার্ব খাবেন, যেন হজম হতে দেরি হয় আর বেশিক্ষন পেট ভরা থাকে। যেমন ওটস, বার্লি, লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত। এগুলার ফাইবার বেশি সময় ধরে পেট ভরা রাখবে সাথে সারাদিন এনার্জেটিকও থাকবেন। রুটি ১-২ টা/ ওটস ৫০ গ্রাম / ৩-৪ টেবিল চামচ যেন ৫০০ গ্রামের জার ১০ দিন যায়/ লাল চালের ভাত ১-১.৫ কাপ/ ২ পিস মাল্টি গ্রেইন ব্রেড। সাথে প্রোটিন হিসাবে ১-২ পিস মুরগির মাংস/মাছ, ১-২টা ডিমের সাদা, বা ১০-১৫ পিস সয়া নাগেট কারি করে। মশলাযুক্ত খাবার স্ট্রিক্টলি এভোয়েড করবেন। মাছ মাংসের ঝোলের বিপরিতে সবজি বা ডাল খাবেন। রেড মিট একদম বাদ। সাদা ভাত/রুটি/পাউরুটি বাদ। 

ইফতার :
প্রথমেই ভোরের মত লেবু পানি খাবেন। মিনিমাম ১ লিটার পানি খাবেন ইফাতারের সময়। ৩-৪ টা খেজুর দিয়ে রোযা ভাঙবেন। খেজুর সুগার, ফাইবার আর এনার্জিতে ভরপুর সাথে ক্যালরিও। তাই কোনমতেই ৩-৪ পিসের বেশি না। খেজুর আপনার ব্লাড সুগার লেভেল স্ট্যাবল হতে সাহায্য করবে এবং সারাদিনের না খেয়ে থাকার জন্য দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করবে। ১ পিস খেজুরে ২৩ ক্যালরি। ইফতারে ১ গ্লাস ফ্রেস ফলের জুস /যেকোনো ১ টা ফল রাখতে পারেন, যেমন আপেল, কমলা, পেয়ারা। পিয়াজু, বেগুনি, ছোলা,মুড়ি, জিলাপি এসব ভুলেও ছুবেন না। নইলে ওজন কমাতে হবে না। 

রাতের খাবার :
রাতের খাবার টা সালাদ/ ফল দিয়ে সেরে ফেলবেন যদি ওজন কমানো নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত থাকেন। ভেজিটেবল/ চিকেন স্যুপ খেতে পারেন। অথবা লাল আটার রুটি ১-২ পিস সবজি দিয়ে / ওটসের চাপাতি সাথে ডিমের সাদা অংশ দিতে পারেন। প্রোটিন হিসাবে ডিমের সাদা অংশ/ সাদা মাংস/মাছ বা নাগেট খেতে পারেন। 
যেকোনো সময় ১ গ্লাস দুধ খাবেন লো-ফ্যাট সম্ভব না হলে নরমালটা। রাতে খেলে বেটার হয়।
এখন কারো সাদা ভাত না খেলে যদি ঘুম না হয় তিনি চাইলে ইফতারে ১-১.৫ কাপ খেতে পারেন সবজি, মাছ মাংস ডাল দিয়ে। সাথে খেজুর আর লেবুপানি টা রাখবেন। সেক্ষেত্রে রাতে শুধু সালাদ/ ফল খেতে পারবেন।
সিজনাল ফল হিসাবে আম ২-১ পিস (গোটা) মাঝারি সাইজ খেতে পারেন। ১০০ গ্রামে ৬০ ক্যালরি হিসাব করে নিবেন।
সহজ পাচ্য আর সেদ্ধ খাবার খাবেন। তেল, মশলা, মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ। গ্যাসের সমস্যার কারণ ভাজা-পোড়া খাওয়া।
ক্যাফেইন স্ট্রিক্টলি বাদ। চা, কফি, কোক সব বাদ। এসব ফ্লুইড লস বাড়ায়। ডিহাইড্রেট করবে বডিকে। 

কিছু টিপস :
এবার আসি ওয়ার্কআউট প্রসঙ্গে রোযার সময় দিনে কিছু করা যাবে না। ইফতারের পর নামাজ পড়ে সর্বোচ্চ ৪০-৪৫ মিনিট হাঁটতে পারেন। ২০ মিনিট হলেও সমস্যা না। অথবা রুমে ফ্রি হ্যান্ড কিছু ওয়ার্কআউট করতে পারেন ২০-৩০ মিনিট। বেশি করা যাবে না যেহেতু বেশি ক্যালরি কনজিউম হবে না এত অল্প সময়ে। সপ্তাহে ২-১ দিন রেস্ট নিবেন। সারাদিন একটিভ থাকার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন খালিপেটে ফ্যাট বার্ন বেশি হয়।

ঘুমের বিষয়টা বলি, ৬-৭ ঘন্টা ঘুমাবেন এর বেশি বা কম না। রাতে যেহেতু ৩-৪ ঘন্টার বেশি সম্ভব না ঘুমানো সেহেতু বাকিটা দিনের যেকোন সময় ঘুমিয়ে কভার করবেন। ঘুম খুবই প্রয়োজন কারণ বডির সকল পরিবর্তন ঘুমের মধ্যে হয়। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত