চুল দ্রুত পেকে যাওয়া মানেই হার্ট ভাল নেই!
প্রকাশ | ২৫ মে ২০১৭, ০১:৩০
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চুল পাকবে, এ আর নতুন কথা কী! কিন্তু সময়ের আগেই যদি চুল পাকতে শুরু করে তাহলে সাবধান! কারণ সম্প্রতি প্রাকাশিত এক গবেষণাপত্র অনুসারে চুল সাদা হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে হার্টের স্বাস্থ্যের। আপনার হার্ট যত খারাপ হতে থাকবে, তত চুলও পাকবে, এমনটাই দাবি গবেষকদের। কিন্তু হার্টের সঙ্গে চুল পেকে যাওয়ার কী সম্পর্ক? এই উত্তর খোঁজারই চেষ্টা করা হল বাকি প্রবন্ধে।
সাদা চুল এবং হার্ট অ্যাটাক
করোনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হতে চলা এমন ৫৪৫ জনের উপর এই গবেষণা চলানো হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের বেশ কয়েকটি দলে ভাগ করে গবেষকরা জানার চেষ্টা করেছিলেন চুল পেকে যাওয়ার সঙ্গে হার্টে স্বাস্থ্যের আদৌ কোনও সম্পর্ক আছে কিনা। গবেষণা শুরু হওয়ার পর পরই অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাদের চুল একেবারে কালো তাদের একটা দলে রাখা হয়েছিল। দ্বিতীয় দলের লোকদের কালো চুল বেশি ছিল, তবে কিছু সাদা চুলও ছিল। আর তৃতীয় দলে রাখা হয়েছিল এমন মানুষদের যাদের পাকা এবং কাঁচা চুলের সংখ্যা ছিল সমান। চতুর্থ দলের সদস্যদের সাদা চুলের সংখ্যা ছিল বেশি। আর সবথেকে শেষের দলটিতে এমন মানুষদের রাখা হয়েছিল যাদের সব চুল সাদা হয়ে গিয়েছিল।
এই গবেষণায় যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের কোনও জটিল রোগ, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিস রয়েছে কিনা সে বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন গবেষকেরা। এর পর শুরু হয়েছিল মূল গবেষণা। প্রত্যেক জন অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে থাকা ২ জন করে গবেষক প্রতি মুহূর্তে সব ডেটা সংগ্রহ করে যাচ্ছিলেন। কারণ এই গবেষণাটাও সহজ ছিল না। একবার ভাবুন তো এই প্রবন্ধটি পড়ার পর আপনিও নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে এমন অনেক কিছু জেনে যেতে পারবেন, যা এতদিন পর্যন্ত প্রায় সম্ভবই ছিল না।
গবেষণা শেষে যে সত্যটা সামনে এল
একাধিক স্তরে বারং বার সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করার পর গবেষকরা দেখতে পেলেন যাদের বেশিরভাগেরই চুল পেকে গেছে তাদের হার্টের অবস্থা বেশি খারাপ, বাকিদের তুলনায়। শুধু তাই নয়, অনেকেরই শুধুমাত্র চুল সাদা হওয়া ছাড়া হার্ট খারাপ হয়ে যাওয়ার কোনও লক্ষণই দেখা যায়নি। এর পরই গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন যে চুলের পেকে যাওয়ার সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে হার্টের স্বাস্থ্যের। তাই এবার থেকে একটু লক্ষ রাখুন আপনার চুল দ্রত সাদা হয়ে যাচ্ছে না তো। যদি এমনটা হয়, তাহলে যত শীঘ্র সম্ভ চিকিৎসকের পরমার্শ নিন। না হলে কিন্তু বিপদ!
পুরোটাই নির্ভর করে শরীরের ভিতরে কত দ্রুত বদল ঘটছে তার উপর
গবেষকরা লক্ষ করেছেন হার্ট ডিজিজের মতো কোন জটিল রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে দেহের অন্দরে দ্রুত বদল ঘটতে শুরু করে। যার সরাসরি প্রভাব পরে অন্য অঙ্গের উপরও। এক্ষেত্রে যেমন চুলের উপর প্রভাব পরেছে। এইসব দেখার পর একটা বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, যে শরীরেরও নিজের একটা ভাষা রয়েছে, যা দিয়ে সে তার কষ্ট প্রকাশ করে। একবার যদি শরীরের এই ভাষা বুঝে নিতে পারেন, তাহলে কত রকমের রোগকে যে আটকাতে পারবেন তা বলে শেষ করার নয়। তাই সব শেষে বলতেই হয় যে নিজের শরীরের বদলের উপর নজর রাখতে শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন অনেক রোগকেই জটিল হওয়ার আগে আটকে ফলতে পারবেন।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন