করলার রস এবং ডায়াবেটিস
প্রকাশ | ১৩ মে ২০১৭, ২০:৪৪
রক্তে সুগারের মাত্রা সামান্য বাড়তে না বাড়তেই পরের দিন থেকে করলার রস খাওয়া শুরু করে দেন অনেকে। কারণ তারা বিশ্বাস করেন এই সবজিটির মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে দারুন কাজে লাগে। কিন্তু এই ধরণাটি কি আদৌ ঠিক?
এশিয়া মহাদেশের জনপ্রিয় সবজিগুলির মধ্যে অন্যতম হল করলা। কেন হবে নাই বা বলুন! স্বাদে না হলেও গুণ বিচারে কিন্তু এই সবজিকে গুরুত্ব না দিয়ে কোনো উপায় নেই। কারণ বেশ কিছু গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে একাধিক রোগের প্রকোপ কমাতে বাস্তবিকই করলার কোনো বিকল্প হয় না। কী কী রোগ সারানোর ক্ষমতা রয়েছে ছোট্ট এই সবজিটির তা জেনে নিন-
১. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
এই ধরণার মধ্যে কোনো ভুল নেই যে, রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে করলা। আসলে এই সবজিটিতে উপস্থিত কয়ারেটিন নামে একটি উপাদান রক্তে বয়ে চলা ব্লাড সুগারের মাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো ডায়াবেটিস রোগীদের এই ঘরোয়া চিকিৎসাটির সাহায্য নিতে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার রস খেলে তবেই উপকার মিলবে।
২. রক্ত পরিশুদ্ধ হয়
আমরা কতদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকবো তা অনেকাংশেই নির্ভর করে রক্ত কতটা শুদ্ধ রয়েছে তার উপর। তাই তো সুস্থভাবে বাঁচতে রক্তের দেখভাল করাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? প্রতিদিন করলার রস খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই উপকার মিলবে। কারণ এই পানীয়টিতে উপস্থিত "ব্লাড পিউরিফাইং এজেন্ট" রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. পেটের রোগের প্রকোপ কমায়
করলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমানোর পাশাপাশি নানাবিধ স্টমাক ডিজঅর্ডারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে ফাইবার শরীরে প্রবেশ করা মাত্র গ্যাস্ট্রিক জুসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে একাধিক পেটের রোগের লক্ষণ কমতে শুরু করে।
৪. ওজন হ্রাস করে
অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে আজ থেকেই করলার রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আসলে এই পানীয়টি লিভার ফাংশন বাড়ানোর পাশাপাশি হজম ক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটায়। আর একবার যদি হজম ঠিক মতো হতে থাকে, তাহলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমার সুযোগই পায় না। ফলে ওজন হ্রাস পেতে শুরু করে।
৫. পাইলসের কষ্ট কমায়
প্রতিদিন সকাল নিয়ম করে করলার রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন এক মাসেই পাইলসের যন্ত্রণা একেবারে কমে যাবে। আর যদি এই পানীয় খেতে ইচ্ছা না করে, তাহলে করলা গাছের মূল বেটে নিয়ে সেই পেস্ট পাইলসের উপর লাগালেও সমান উপকার পাওয়া যায়।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
প্রতিদিন সকাল বেলা করলার রস খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে নানাবিধ রোগের প্রকোপ নিমেষে হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে সংক্রমণ বা ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
৭. দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়
করলার রসে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় বিটা-ক্যারোটিন, যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮. ক্যান্সার বিরোধী
করলায় উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান শরীরে ক্যান্সার সেলের বৃদ্ধি আটকায়। ফলে এই মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। প্রসঙ্গত, অ্যানিমিয়া এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের চিকিৎসাতেও এই সবজিটি দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে।