হাটুর ব্যথা থেকে মুক্তি দেবে মৌমাছির বিষ
প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০১৭, ০২:২৬
হাঁটুর ব্যথা একটি সর্বজনীন রোগ। বয়স ৪০ শের কোঠায় প্রবেশ করলেই হাত-পায়ের গাঁটে ব্যথা শুরু হয় অনেকের। মানবদেহের অস্থিসন্ধি বা জোড়ার তরুণাস্থি বা তরুণাস্থির নিচের হাড়ের এই ক্ষয়জনিত পরিবর্তনকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় অস্টিও-আর্থরাইটিস। হাত, পা ও মেরুদণ্ডের ওজন বহনকারী যে কোনো জোড়াই অস্টিও-আর্থরাইটিসে আক্রান্ত হতে পারে। হাড়ের গাঁটে ইনফ্লেমেশন বা গাঁট ফুলে যাওয়ার কারণে আর্থরাইটিস মাথা চাড়া দেয়। এই রোগে হাঁটুর জোড়া ফুলে গিয়ে পুঁজ বা তরল পদার্থ জমা হয়।
যন্ত্রনাদায়ক এই রোগটির হাত থেকে মুক্তির নানা চেষ্টা করলেও এতো দিন কেবল মাইক্রো-ফ্র্যাকচার নামে এক ধরনের আকুপাংচার করা হতো। এই পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ কাটা-ছেঁড়া ও রক্তপাতহীন লেজার রশ্মি প্রয়োগের মাধ্যমে আক্রান্ত হাড় ও তরুনাস্থিতে প্রয়োজন অনুযায়ী অতি ক্ষুদ্র ছিদ্র করা হয়।
তবে কাটা ছেড়া বা লেজার ছাড়া এবার এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে গবেষকরা শোনালেন নতুন আশার বাণী। গবেষকরা জানিয়েছেন, আর্থরাইটিস সারিয়ে তুলবে মৌমাছির বিষের তৈরি ইনজেকশন।
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইঁদুরের উপর চালানো গবেষণায় এমনই আশার ইঙ্গিত পেয়েছেন চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা।
প্রতিবদেনে বলা হয়েছে, আর্থারাইটিসে ভোগা বিশ্বের প্রায় ৩৫ কোটি মানুষের জন্য এই চিকিৎসা পদ্ধতি নতুন আশার আলো হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন চিকিৎসকরা।
সেইন্ট লুইসের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকদের তৈরি এই ইনজেকশন তৈরিতে সহায়তা করেছেন অধ্যাপক স্যামুয়েল উইকলাইন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ভয়াবহ দুর্ঘটনা বা ক্রীড়া ক্ষেত্রে হাড়ে মারাত্মক আঘাত পাওয়ার পরই এটি দেয়া হলে আর্থারাইটিস হওয়ার আশঙ্কা ঠেকানো যাবে। এছাড়া, আর্থারাইটিসে দীর্ঘদিন ভুগছেন এমন রোগীকে এটি দেয়া হলে তারও প্রচণ্ড বেদনাদায়ক পরিস্থিতির অবসান ঘটবে।
তিনি জানান, মৌমাছির বিষ থেকে নেয়া পেপটাইড দিয়ে ক্ষুদে ন্যানো ন্যানোকণিকা তৈরি করেছেন গবেষকরা। মেলিটটিন নামের এই পেপটাইডে রয়েছে প্রদাহ-নাশক শক্তিশালী ক্ষমতা। যাতে দেহের তরুণ অস্থি ধ্বংস ঠেকানো সম্ভব হবে।
সাধারণত মৌমাছি হুল ফোটানোর পর তীব্র যন্ত্রণা হয়। মৌমাছির বিষের কারণেই এমনটি হয়। এই বিষ নিরাপদে সরাসরি মানব শরীরে ঢোকানোর পথ পাওয়া যাচ্ছিল না। কারণ দেহে ঢোকানোর পর তা তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। তবে ন্যানো প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়েছে।