প্যারালাইসিস থেকে বাঁচতে শিরদাঁড়া সোজা রাখুন

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:১১

জাগরণীয়া ডেস্ক

স্কুল ব্যাগের ভারে ঝুঁকে হাঁটে শিক্ষার্থীরা। মাথা নীচু করে মোবাইল-কম্পিউটার ঘাঁটছে সবাই। এখনই লাইফস্টাইল পরিবর্তন করুন। এইসব বদ অভ্যাস থেকে হতে পারে সার্ভাইকাল বা লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস। যা সঠিক সময় চিকিৎসা না করালে প্যারালাইসিস পর্যন্ত হতে পারে! অতএব মাথা সোজা রাখুন। শিরদাঁড়া সোজা করুন। না বেঁকে, না ঝুঁকে হাঁটুন।

সার্ভাইকাল স্পন্ডাইলোসিস কী?
কোনও ব্যক্তির ঘাড়ে আর্থাইটিস হলে তাকে সার্ভাইকাল  স্পন্ডাইলোসিস বলে। এক্ষেত্রে ঘাড়ের ছোট ছোট জয়েণ্টগুলির মধ্যে কার্টিলেজ ক্ষয় হয়ে যায়। ফলে দুটি হাড়ে ঘষা লেগে ব্যথা হয়।

কারণ
বয়স
ঘাড়ের উপর অতিরিক্ত চাপ
দীর্ঘক্ষণ ঘাড় গুঁজে লেখা
ঘাড়ের এক্সারসাইজ না করা
অতিরিক্ত ভারী ব্যাগ বা ওজন বহন করা
ভিটামিন ডি-এর অভাব

কী দেখে বুঝবেন?
ঘাড়ে অসহ্য যন্ত্রণা
বেশিক্ষণ লেখাপড়া করলেই যন্ত্রণা বৃ‌দ্ধি
ঘাড় থেকে ব্যথা হাতে নামে
হাত ঝিম ঝিম করা
মাথা ঘোরা
গা বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া
ভারসাম্যের সমস্যা

লাম্বার  স্পন্ডাইলোসিস
কোমরে যখন আর্থ্রাইটিস হয় তখন তাকে লাম্বার  স্পন্ডাইলোসিস বলে। এক্ষেত্রে কোমরের জয়েন্টের কার্টিলেজ ক্ষয় হয়ে অসহ্য ব্যথা হয়ে থাকে।

কারণ
বয়সজনিত কারণ
বিলাসবহুল জীবনযাত্রায় আসক্তি
দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা
অতিরিক্ত ঝুঁকে ভারী জিনিস তোলা
নিয়মিত শরীরচর্চা না করা
অতিরিক্ত ওজন
ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাব
সঠিক পদ্ধতিতে না বসা
 
কোমরে আর্থাইটিসের লক্ষণ
অসহ্য কোমরে যন্ত্রণা
ব্যথা সাধারণত কোমর থেকে পায়ের দিকে নামে
হাঁটলে ব্যথা কিন্তু বিশ্রাম নিলে ব্যথা চলে যাওয়া
হাঁটতে হাঁটতে হঠাত্‍ পা আটকে যাওয়া
পা ঝিনঝিন করা

সার্ভাইকাল স্পন্ডাইলোসিসে বিশ্রাম জরুরি। লাম্বার স্পন্ডাইলোসিসের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পরীক্ষা হল এক্স-রে। কিন্তু অনেক সময় এক্স-রে’র রিপোর্ট অনুযায়ী রোগীর শারীরিক অবস্থা বোঝা যায় না। তাই ঠিক কোন জয়েন্টে কতটা ক্ষয় হয়েছে তা জানতে এমআরআই স্ক্যান করাতে হয়।

চিকিৎসা
অসুখ প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে চিকিৎসক সাধারণত কিছু ব্যথার ওষুধ, অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি মেডিসিন দিয়ে এবং এক্সারসাইজ করতে বলে চিকিত্‍সা করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি এবং আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি কাজে লাগে।
কনজারভেটিভ চিকিৎসায় যদি ভাল কাজ না হয় তখন সার্জনকে দেখাতে হবে।
স্পাইনাল কিংবা লাম্বার  স্পন্ডাইলোসিসে ঘাড় বা কোমরের নার্ভের উপর যদি ক্রমশ চাপ পড়ে তাহলে সার্জারি করিয়ে নার্ভের উপর থেকে চাপ  সরানো হয়। দীর্ঘদিন এই চাপ থাকলে রোগীর প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে।

স্পাইনাল, লাম্বার স্পাইন ফিউশন
এক্ষেত্রে জয়েন্টের কার্টিলেজ বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত হলে এবং হাড় বেড়ে গেলে সার্জারি করে কেটেমেটাল প্লেট, স্ক্রু এবং রড দিয়ে হাড়ের জয়েন্ট ফিক্সেশন করা হয়। একে বলে স্পাইনাল বা লাম্বার স্পাইন ফিউশন।

সুস্থ্য থাকতে
পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে (দুধ জাতীয় খাবার, সবুজ শাক সবজি, ফল)।
নিয়মিত শরীরচর্চা করা।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
একটানা ১ ঘণ্টার বেশি বসে কাজ না করা। মাঝে মাঝেই উঠে একটু পায়চারি করতে হবে।
অতিরিক্ত ভারী ব্যাগ বহন না করা।
পড়ার টেবিলে গোল হয়ে বসে পড়াশোনা করা উচিত।
শক্ত বালিশ ও বিছানা ব্যবহার করা।
ঘাড়ে বা কোমরে ব্যথা হলে তা ফেলে না রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত