দু’টিতে মিলে ঠেকাবে ক্যান্সার!
প্রকাশ | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৭:৫৪ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৮:০২
কোন একটি ওষুধ সেবনে শরীরের যে কাজ হয়, এর সঙ্গে মিলিয়ে আরেকটি ওষুধ সেবন করলে তা ক্যান্সার আটকাতে পারে। সম্প্রতি গবেষণা করে এমন তথ্যই দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ডায়াবিটিসের ওষুধ মেটফর্মিন এবং হাইপারটেনশনের ওষুধ সাইরোসিঙ্গোপিন একসঙ্গে মিলিয়ে সেবন করলে তা হয়ে উঠতে পারে মারণ রোগের ঘাতক ক্যান্সারের ওষুধ!
সুইৎজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব বাসেল-এর এক দল বিজ্ঞানীর গবেষণায় দেখা গেছে, ওই দুই ওষুধের যোগফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি আটকায়।
গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক সায়েন্স জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত হয়েছে।
লিউকেমিয়ার রোগীদের রক্তের নমুনার উপরে প্রয়োগের পাশাপাশি গবেষণাগারে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত ইঁদুরের উপরে ওই কম্বিনেশন ড্রাগ প্রয়োগ করে সুফল মিলেছে বলে ওই বিজ্ঞানীদের দাবি।
ডায়াবিটিস প্রতিরোধে মেটফর্মিন প্রথম সারির ওষুধ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ওই ওষুধ দেহে ইনসুলিন-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকলে স্তন, ইউটেরাইন, কোলো-রেকটাল এবং থাইরয়েড ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ে। তাই যারা মেটাফর্মিন খেয়ে ওই প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আটকে দেন, স্বাভাবিক ভাবে তাদের ক্যান্সারের প্রবণতা খানিকটা ঠেকানো সম্ভব।
এন্ডোক্রিনোলজিস্ট সতীনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, মেটফর্মিনের ক্যানসার প্রতিরোধী চরিত্রের কথা ইদানীং সামনে আসছে। এটা জানার পরে ডায়াবিটিক ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ বিশেষ ভাবে চালু রাখা হচ্ছে। তবে সাইরোসিঙ্গাপিন-এর ক্যান্সার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এখানকার চিকিৎসক মহল তেমন ওয়াকিবহাল ছিল না।
গবেষণাপত্র প্রকাশের পরে অনেকেই মানছেন, সাইরোসিঙ্গাপিন একা তেমন প্রভাব না ফেললেও মেটফর্মিনের সঙ্গে তার ক্যান্সার প্রতিরোধী চরিত্রটি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সম্ভব।
কার্ডিওলজিস্ট শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, এক এক সময়ে এক এক ওষুধ যে কারণে তৈরি হয়, পরে দেখা যায় সেই কারণে ততটা কার্যকরী না হলেও অন্য ক্ষেত্রে তা কার্যকরী হচ্ছে। তিনি বলেন, গর্ভাবস্থায় বমি আটকানোর ওষুধ পরে ক্যান্সারের ওষুধ হিসেবে কাজ দিচ্ছে। অবসাদ কমানোর ওষুধ ধূমপানের প্রবণতা কমাতে কাজ দেয়। এটাও হয়তো অনেকটা তাই।
ক্যান্সার চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ওষুধটির দাম কম। এমন কম্বিনেশন ড্রাগ ভবিষ্যতে বাজারে এলে ক্যান্সার রোগীদের জন্য সুখবর। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।