শীতে নবজাতকের যত্নে কী করবেন
প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬, ২৩:৩০ | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬, ০০:০৬
শীত পড়তে শুরু করেছে চুপিসারে। নবজাতক, অর্থাৎ সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর জন্য এই অল্প শীতই জটিল রোগ ঘটাতে পারে। তাই এখন থেকেই সাবধানে থাকতে হবে। শিশুদের ত্বক পাতলা, অর্থাৎ ত্বকের নিচে স্তরে চর্বির আবরণ নেই। তাই অল্প শীতেই বাচ্চারা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলে বিপাক ক্রিয়া বন্ধ হয়ে খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে।
এ সময় সন্ধ্যা হওয়ার আগেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখুন। এতে শীতের সঙ্গে সঙ্গে মশার উপদ্রব থেকেও বাঁচা যাবে। উষ্ণতার জন্য মায়ের বুকের কাছাকাছি রাখতে পারেন বাচ্চাকে। একে ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার বলে। ঠিক যেমন করে ক্যাঙ্গারু তার বাচ্চাকে বুকের কাছে বিশেষ থলেতে রাখে, তেমন। এতে বাচ্চা ঠান্ডা থেকে রক্ষা পাবে। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
জন্মের সময় বাচ্চাদের খুব পাতলা এক ধরনের চুল থাকে। অপবিত্র বলে অনেকে এই চুল দ্রুত কেটে ফেলতে চান।
এর কোনো প্রয়োজন নেই। প্রথম অপরিণত চুল পড়ে নিজে থেকেই পরিণত চুল গজাবে। তা ছাড়া চুল মাথার তাপমাত্রা ধরে রাখে, চুল কামিয়ে দিলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। খুব বেশি বড় চুল হলে এবং তাতে সমস্যা তৈরি হলে কাঁচি দিয়ে বড়জোর একটু ছেঁটে দিন।
জন্মের পর ত্বকে এক ধরনের সাদা আবরণ দেখা যায়। অনেকেই এটি নোংরা ভেবে মুছে দেন বা গোসল করিয়ে ধুয়ে দেন। আসলে কিন্তু এই আবরণ নবজাতকের দেহের তাপমাত্রা ধরে রাখে, জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে সুরক্ষা দেয়। তাই এটি সঙ্গে সঙ্গে মোছা উচিত নয়। জন্মের ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত গোসল করানো উচিত নয়। এর মধ্যে শিশুর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণক্ষমতা গড়ে উঠবে।
শীতে অনেকে বাচ্চার নাভিতে তেল মেখে রোদে শুইয়ে রাখেন। এতে সংক্রমণ হতে পারে নাভীতে। জন্মের পর শুধু একবারের জন্য জীবাণুনাশক তরল দিয়ে মোছা ছাড়া পরবর্তী সময়ে নাভিতে কিন্তু কিছুই লাগানোর প্রয়োজন নেই। শীতে ডায়াপার পরালে তাও থাকবে নাভির নিচে।
ডায়াপার ছয় ঘণ্টার বেশি কোনোভাবেই রাখা যাবে না। ডায়াপার থেকে র্যাশ হতে পারে, তাই আগে থেকে ভ্যাসলিন বা জিঙ্কসমৃদ্ধ ক্রিম লাগিয়ে দিন।
শীতে নবজাতককে অবশ্যই হাতমোজা, পা-মোজা ও কানটুপি পরাতে হবে। উল বা পশমে অ্যালার্জি হলে সেগুলো পরিহার করে ভারী সুতির জামা পরান। সন্ধ্যার পর বাইরে না বের হলেই ভালো।
লেখক : রেজিস্ট্রার, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ