করোনা ভাইরাস: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গণবিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২০, ১৬:৪৪
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবেলায় জনস্বার্থে আইনের প্রয়োগ বিষয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
১২ মার্চ (বৃহস্পতিবার) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর বিভিন্ন ধারা ও উপধারা উল্লেখ করে তা প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে বলেও গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ধারাগুলো হচ্ছে-
ধারা-১(চ): বাসগৃহ, অন্যান্য গৃহ, ক্লিনিক, হাসপাতাল এবং রোগ নির্ণয় কেন্দ্র বা কোন সংক্রামণের আধার হিসেবে বিবেচিত হইলে উক্ত স্থান বা স্থাপনা পরিদর্শন ও তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ।
ধারা-(জ): সংক্রমক রোগের তথ্য রহিয়াছে এরূপ কোনো ব্যক্তিকে উক্ত রোগের বিষয়ে অধিদপ্তরের নিকট তথ্য প্রেরণের নির্দেশনা প্রদান।
ধারা-১(ট): সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হইয়াছেন এরূপ কোন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট হাসপাতাল, অস্থায়ী হাসপাতাল, স্থাপনা বা গৃহে অভ্যন্তরীণ (কোয়ারেন্টাইন) রাখা বা পৃথকীকরণ (আইসোলেশন)।
ধারা-১(ত): সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে উড়োজাহাজ, জাহাজ, জলযান, বাস, ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন দেশে আগমন, নির্গমন বা দেশের অভ্যন্তরে এক স্থান হতে অন্য স্থানে চলাচল নিষিদ্ধকরণ।
অন্য সংশ্লিষ্ট ধারা গুলিতে যা রয়েছে তা হল-
ধারা-১০: সংক্রামক রোগের তথ্য প্রদান- (১) যদি কোন চিকিৎসক সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন এবং উক্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি, কোন বাসগৃহ, প্রাঙ্গণ বা এলাকা সংক্রামক রোগে অস্তিত্ব সম্পর্কে অবহিত হন, তাহা হইলে তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে অবহিত করবেন।
(২) যদি কোনো বোডিং, আবাসিক হোটেল বা অস্থায়ী বাসস্থানের মালিক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির যুক্তিসঙ্গত কারণে বাধা হয় যে, উক্ত স্থানে বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হইয়াছেন তাহা হইলে তিনি অনতিবিলম্বে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসককে অভিহিত করিবেন।
ধারা-১১: সংক্রমিত এলাকা ঘোষণা, প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি- (২) মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া তাৎক্ষণিকভাবে কোন সংক্রামক রোগ সীমিত নির্মূল করা সম্ভব নহে, তাহা হইলে তিনি সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা সংক্রমিত স্থানে অন্য কোনো ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ, সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
ধারা-১৪: রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে সামরিক বিচ্ছিন্নকরণ- যদি ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী এই এরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোন সংক্রমিত ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন করার না হইলে তাহার মাধ্যমে অন্য কোন ব্যক্তি সংক্রমিত হইতে পারেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে অন্য কোন স্থানে স্থানান্তর বা বিচ্ছিন্ন করা যাইবে।
ধারা-১৮: যানবাহন জীবাণুমুক্তকরণ এর আদেশ প্রদানের ক্ষমতা- ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী নিকট যদি এই রূপ বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, কোন যানবাহন সংক্রামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হইয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্ত যানবাহন জীবানুমুক্ত করণের জন্য উক্ত গাড়ির মালিক বা স্বত্বাধিকারী তত্ত্বাবধায়কে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।
ধারা-২০: মৃত দেহের সৎকার- (১) যদি কোন ব্যক্তির সংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণ করেন বা করিয়াছেন বলিয়া সন্দেহ হয় তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির মৃতদেহ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নির্দেশনা মোতাবেক দাফন বা সৎকার করিতে হবে।
ধার-২৫: দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপনের অপরাধ ও দণ্ড- (১) যদি কোন ব্যক্তি- (ক) মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং (খ) সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন নির্দেশ পালনে ও সম্মতি জ্ঞাপন করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। (২) যদি কোন ব্যক্তি (এই ধারার) উপধারা (১) এর অধীনে কোন অপরাধ সংঘটিত করেন, তাহা হইলে তিনি অনুরোধে ৩ মাস কারাদণ্ডে বা অনন্ত ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ধারা-২৬: মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদানের অপরাধ ও দন্ড- (১) যদি কোন ব্যক্তি সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদান করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরোধ করা হইবে একটি অপরাধ। (২) যদি কোন ব্যক্তি (এই ধারার) উপধারা ( ১) -এর অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত করেন, তাহা হইলে তিনি অনুর্ধ দুই মাস কারাদণ্ডে বা অনূর্ধ্ব ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ধারা-২৭: ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ- এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার ও আপীল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
এছাড়া বিদেশ থেকে আগত কিছু প্রবাসী বা তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিবর্গ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আরোপিত কোয়ারেন্টাইন শর্ত সঠিকভাবে প্রতিপালন করছেন না। অনেকেই মিথ্যা তথ্য ও গুজব রটে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সকলকে বর্ণিত আইন অনুযায়ী এবং নির্দেশিত পন্থায় যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানাচ্ছেন।