সেরোটাইপ-৩ ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০১৯, ২২:৪৪

জাগরণীয়া ডেস্ক

এবার সেরোটাইপ-৩ (শক সিনড্রোম) ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি বলে জানালেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম শামসুজ্জামান।

তিনি বলেন, এতদিন বাংলাদেশে ডেঙ্গু সেরোটাইপ-১ ও সেরোটাইপ-২-এর প্রকোপ ছিল। কিন্তু এবার সেরোটাইপ-৩ (শক সিনড্রোম) ডেঙ্গুর প্রকোপই বেশি। শক সিনড্রোমের উপসর্গ হলো শ্বাস-প্রশ্বাস অসুবিধা হওয়া কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া। ত্বক শীতল হয়ে যাওয়া। অবিরাম অস্বস্তি, ত্বকের ভেতরের অংশে রক্তক্ষরণের কারণে ত্বকের ওপরের অংশে লাল ছোপ সৃষ্টি হওয়া। বমি, মল কিংবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রচ- পেটব্যথা ও অনবরত বমি হওয়া, নাক ও দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ ও অবসাদ। এ উপসর্গগুলো চোখে পড়লে আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

সেরোটাইপ-১ মূলত সাধারণ ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু। দ্বিতীয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হেমোরেজিক (রক্তক্ষরণ) ডেঙ্গু। সাধারণত ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু রোগী দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে হেমোরেজিক ডেঙ্গু দেখা দেয়। সাধারণত ডেঙ্গু দেরিতে ধরা পড়লে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুই শক সিনড্রোমে রূপ নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে রোগীর ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই মৌসুমে যেকোনো জ্বর হলেই প্রথমে রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু কি না তা নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত তীব্র জ্বর এবং সেই সঙ্গে শরীরে প্রচন্ড ব্যথা হয়। জ্বর ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। শরীরে বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা হয়। এছাড়া মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়। জ্বর হওয়ার চার বা পাঁচ দিনের সময় সারা শরীরে লালচে দানা দেখা যায়। এর সঙ্গে বমিভাব এমনকি বমি হতে পারে। রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করে এবং রুচি কমে যায়।

ডেঙ্গুর প্রকোপ সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেবরিনা ফ্লোরা বলেন, সাধারণত জুলাই থেকে শুরু হয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম। এবার জুনেই শুরু হয়েছে। এবার বর্ষা মৌসুমে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ তাড়াতাড়ি শুরু হয়েছে। বর্ষায় বৃষ্টিপাত হলে ডেঙ্গুর জীবাণুবহনকারী এডিস মশার লার্ভা পানিতে ভেসে যায়। লার্ভা থেকে মশা হতে পারে না। এবার বৃষ্টিপাত নেই। তাই এডিস মশার প্রজনন বেড়েছে। গ্রামে পানি বহমান। কিন্তু শহরে ফুলের টবে, টায়ারে, নির্মাণাধীন স্থাপনায়, এসিতে, ফ্রিজে জমে থাকা পানিতে সহজেই এডিস মশা ডিম পাড়ে ও সে ডিম থেকে মশা হয়। সাধারণত একটি এডিস মশার ডিম থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে বাচ্চা হয়। সেজন্য আমরা বলি দেড় থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে। এতে মশা ডিম পারতে পারে না। পারলেও ওই ডিম থেকে বাচ্চা হতে পারে না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত