‘সন্তানের লৈঙ্গিক পরিচয় জানতে আগ্রহী ৪০ শতাংশ গর্ভবতী’
প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০১৯, ১৬:৪৪
সন্তান জন্মের পূর্বে আলট্রাসনোগ্রাফি ব্যবহার করে ৪০ শতাংশ গর্ভবতী সন্তানের লৈঙ্গিক পরিচয় জেনে নিচ্ছেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
২৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে জন্মের পূর্বে শিশুর লিঙ্গ নির্বাচনের ক্ষেত্রে লৈঙ্গিক পক্ষপাতিত্ব: কারণ ও ফলাফল অনুসন্ধান’ শীর্ষক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষক ও গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক এ কে এম নূরুন নবী গবেষণার প্রেক্ষাপট ও ফলাফল উপস্থাপন করেন।
গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ শনাক্তকরণের প্রযুক্তি সম্পর্কে ৯৯ শতাংশ গর্ভবতী মায়ের ধারণা আছে। ৮৮ শতাংশ গর্ভবতী মা বলেছেন, তাদের এলাকাতেই গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ শনাক্তকরণ প্রযুক্তির সুবিধা আছে। ৮৯ শতাংশ নারী বলেছেন, এনজিও চালিত হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এই সুযোগ বেশি পাওয়া যায়। গবেষকেরা আলট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহারের ওপর নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমন্বয় ও সহযোগিতা কর্মকর্তা এভেঞ্জেলিনা ব্লাঙ্কো গঞ্জালেজ বলেন, গর্ভকালে ভ্রূণের পরিচয় জানার চর্চা থাকলে কন্যাশিশু কমে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। কন্যাশিশু কমলে জোর করে বিয়ে করার, নারী পাচার, নারীর প্রতি সহিংসতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অনুষ্ঠানে গবেষকেরা বলেছেন, দেশে বাছাই করে কন্যা ভ্রূণ হত্যার ঘটনা তাদের গবেষণায় ধরা পড়েনি। তবে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২৮ শতাংশ বিবাহিত নারী ছেলে সন্তানের প্রতি দুর্বল। অপরদিকে, ১২ শতাংশ নারী চান কন্যা সন্তান। বাকি ৬০ শতাংশ নারীরই ছেলে বা মেয়ে সন্তান নিয়ে কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই-গবেষকরা এ বিষয়টি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এবং এ ঘটনার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম একটি বড় ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেছেন।
গবেষণায় ঢাকা, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, গাজীপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জের ১৫-৪৯ বছর বয়সী ২ হাজার ৬১০ জন বিবাহিত নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের আরও বক্তব্য দেন নারী ও শিশুবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মেহের আফরোজ, গবেষণা দলের সদস্য সাফায়েত সুলতান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মাইনুল ইসলাম।