একটানা বসে কাজ করছেন, ক্ষতি হচ্ছে নিজেরই

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০১৯, ২২:০৪

অনলাইন ডেস্ক

যদি দিনে ১০ ঘন্টা বসে থাকেন তাহলে শরীরের যে ক্ষতি হয় তা এক ঘন্টা শরীরচর্চা করে পুষিয়ে দেয়া সম্ভব না। তাই ২-৩ ঘন্টা কাজ করার পর কম করে ১০ মিনিট হেঁটে আসবেন। দীর্ঘ সময় বসে থেকে কাজ করার কুফল্গুলো হল-

১. হার্ট
বসে থাকার সময় আমাদের শরীরে রক্তচলাচল খুব কমে যায়। ফলে দেহে জমে থাকা ফ্যাটের গলন কম পরিমাণে হতে থাকে। এতে ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে যারা দিনে ১০ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় বসে কাজ করেন, তাদের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা, যারা ৫ ঘণ্টার কম সময় বসে থাকেন, তাদের থেকে বেশি হয়। এর থেকে একটা কথাই প্রমাণ হয়ে যায় যে, বসে থাকা মানেই হার্টের ক্ষতি কিন্তু!
 
২. প্যানক্রিয়াস
মাত্র একদিন বেশি সময় বসে থাকলেই ইনসুলিন ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। আর ইনসুলিন যখন ঠিক মতো কাজ করতে পারে না, তখন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই তো বসে কাজ করলে এমন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। সম্প্রতি ডায়াবেটিলোজিয়াতে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে যারা দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি সময় বসে কাজ করেন, তাদের ৯০ শতাংশেরই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩. কোলোন ক্যান্সার
বেশি সময় বসে থাকলে শরীরে ইনসুলিনের উৎপাদন বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পায় কোষেদের জন্মহারও। ফলে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। দেহ সচল না থাকলে শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা কমে যায়।

৪. বদ হজম
খাওয়ার পর পরই যদি বসে পরেন, তাহলে খাবার ঠিক মতো হজম হতে পারে না। 

৫. মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়
বহুক্ষণ বসে কাজ করলে ব্রেন ফাংশনও কমে যায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কে কম পরিমাণ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছানোর কারণে ব্রেন পাওয়ারও কমতে শুরু করে। 

৬. ঘাড়ে এবং কাঁধে যন্ত্রণা
কম্পিউটারে কাজ করার সময় আমরা একটু সামনের দিকে ঝুঁকে যাই। ফলে শরীরের উপরিঅংশ, বিশেষত ঘাড় এবং কাঁধ, শরীরের নিচের অংশের থেকে এগিয়ে যায়।  ফলে ঘাড়ে এবং কাঁধে যন্ত্রণা হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

এক্ষেত্রে কতগুলি নিয়ম মেনে চললে দারুন উপকার পেতে পারেন। যেমন- 
১. কাজের ফাঁক মাঝে মধ্যেই একটু হেঁটে নিন। একভাবে ২-৩ ঘণ্টার বেশি কাজ করা চলবে না। 
২. লিফ্টের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। 
৩. প্রতিদিন কিছুটা সময় হাঁটার চেষ্টা করুন। 
৪. রিভলভিং চেয়ারের পরিবর্তে কাঠের চেয়ার ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এমনটা করলে শরীরের ক্ষতি কম হয়। 
৫. শরীরকে সার্বিকভাবে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন নিয়ম করে শরীরচর্চা করুন।

সূত্র: ডেকান ক্রনিকেল