চিকিৎসার খরচ পরিশোধে ব্যর্থ হলে লাশ জিম্মি করা যাবে না
প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৭, ০২:২৫
চিকিৎসা খরচ পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে কোনো হাসপাতালে বা ক্লিনিকে মৃত ব্যক্তির মরদেহ জিম্মি (ধরে রাখা) করে রাখা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
২০ নভেম্বর (সোমবার) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে এই রায় দিয়েছেন।
রিট আবেদন করা আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গরীব রোগীদের অপরিশোধিত সব বিল পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিকে তহবিল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১২ সালের ৮ জুন সিটি হাসপাতালে নবজাতক মৃত্যুর পর মরদেহ দ্রুত হস্তান্তরে ব্যর্থ হওয়া অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। যার কারণে সিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজর টাকা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে দান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, গাজীপুরের কাপাসিয়ার ডিগদা গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রোকেয়া বেগম গত ২৭ মে সিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তিনি একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন। অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে নবজাতককে ওই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানে সাতদিন পর তার মৃত্যু হয়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটির বাবা সাইফুলের কাছে চিকিৎসা ব্যয় বাবদ ৪২ হাজার টাকা দাবি করে। পাওনা পরিশোধ করে মরদেহ নিয়ে যেতে বলে। এরপর এক সকালে টাকা জোগাড় করার কথা বলে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান সাইফুল। এরপর আর ফিরে আসেননি। মরদেহ নিয়ে না যাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ শিশুটির মরদেহ হেফাজতে নিয়ে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করে। তারা পরে দাফন করে।
মনজিল মোরসেদ বলেন, টাকার জন্য মরদেহ দেয়নি। এটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। কেননা এসব প্রাইভেট হাসপাতাল লাইসেন্স নেওয়ার সময় শতকরা ১০ শতাংশ গরীব রোগীদের জন্য ছাড় দেওয়ার অঙ্গীকার করে। কিন্তু তারা এটা পালন করে না।
বিষয়টি নিয়ে ওই বছরই আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভূইয়া।
রিটের পর আদালত রুল জারি করেন। সেই রুলের শুনানি শেষে সোমবার রায় ঘোষণা করা হয়।