বাংলাদেশের প্রথম নারী ব্যারিস্টার সালমা সোবহান
প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৬, ১৪:৫৩ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০১৮, ১২:২১
বাংলাদেশের প্রথম নারী ব্যারিস্টার সালমা সোবহান। তিনি একাধারে শিক্ষক, আইনবিদ, গবেষক, মানবাধিকারকর্মী, সমাজকর্মী, সর্বোপরি একজন মানবহিতৈষী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
সালমা সোবহানের পুরো নাম সালমা রাশেদা আক্তার বানু। জন্ম ১৯৩৭ সালের অগাস্ট এর ১১ তারিখে। তাঁর বাবা মো. ইকরামুল্লাহ ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব। তাঁর মা শায়েস্তা ইকরামুল্লাহ ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম মহিলা সংসদ সদস্যদের অন্যতম। তাঁর মা-বাবা দু'জনই রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর শ্বশুরও পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সালমা সোবহানের স্বামী বাংলাদেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তাঁর তিন ছেলেন হলেন তৈমুর সোবহান, বাবর সোবহান ও জাফর সোবহান।
ইংল্যান্ডের ওয়েস্টনবার্ট স্কুলে শিক্ষা জীবন শুরু হয় সালমা সোবহানের। পরবর্তীকালে ১৯৫৮ সালে কেমব্রিজের গির্টন কলেজ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৯ সালে লিংকন'স ইন থেকে বার এট’ ল সনদপ্রাপ্ত হন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৬২ সালে। ১৯৫৮ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি ব্যারিস্টার ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবনের শুরুতেই ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের মেসার্স সারিজ অ্যান্ড বিচেনো ল’ ফার্মে লিগ্যাল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে যোগদান করেন সালমা সোবহান। ১৯৬২ সালে বিয়ে হওয়ার পর তিনি ঢাকা চলে আসেন। পরবর্তীতে ১৯৬২ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া)-র গবেষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সুপ্রীমকোর্ট ল’ রিপোর্টসের সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি এবং আরও ৮ জন মানবাধিকারকর্মীর সম্বিলিত প্রয়াসে গঠিত হয় মানবাধিকার সংগঠন ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ (আসক)। ১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আসক-এ বিনা পারিশ্রমিকে নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। নারীদের সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে তাঁর নামে ‘সালমা সোবহান সাংবাদিকতা ফেলোশিপ’ প্রদান করা হয়।
২০০০ সালের সালমা সোবহান পান ‘অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার’ এবং ২০০১ সালে নিউইয়র্কের ‘হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড’ পান।
তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে Legal Status of Women in Bangladesh-BILIA, (১৯৭৫) Peasants Perception of Law-BRAC (১৯৮১), এবং No Better Option Women Industrial Workers, (Co- authored), UPL (১৯৯৮) উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি একটি উপন্যাস এবং তিনটি ছোট গল্প রচনা করেছেন।