মেরিনা হিয়েল: মেরিন সেনা প্লাটুনের প্রথম নারী কমান্ডার

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০১৮, ১৪:৫০

অনলাইন ডেস্ক

সম্মুখযুদ্ধে মার্কিন মেরিন প্লাটুনের প্রথম নারী কমান্ডার হিসেবে যোগদান করে ইতিহাস রচনা করলেন ২৪ বছর বয়সী মেরিনা হিয়েল। মার্কিন মেরিন সেনাদের মাঝে বেশ কয়েকজন নারী পূর্বেও ছিলেন। তবে সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো পদে ছিলেন না। আর এবার সেই সুযোগ পেলেন মেরিনা।

নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, ১৭৫ জন মেরিন সেনা ও নাবিকদের একটি বিশাল গ্রুপকে যে চারজন কমান্ডার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফাস্ট লেফট্যানেন্ট মেরিনা হিয়েল তাদের মধ্যে একজন। তার অধীনে কাজ করছেন ৩৫ জন পুরুষ মেরিন সেনার একটি প্লাটুন। যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন করা হলে তিনিই সরাসরি পদাতিক সেনাদের নেতৃত্ব দেবেন। কঠিন সব তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও তার হাতে থাকবে। এজন্য অবশ্য ইতোমধ্যেই টিম নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছেন মেরিনা।

মেরিন সেনায় পদোন্নতির পর বর্তমানে উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় তিনি একটি প্রশিক্ষণ মিশনে তার টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন। তার অধীনস্থ পুরুষরা অবশ্য কমান্ডারের দক্ষতার ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন এবং তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। 

এক নজরে মেরিনা হিয়েল

মেরিনা বেড়ে উঠেছেন বেথেলহাম, পেনসিলনিয়াতে। তিনি কৈশোরে একটি ঘোড়ার ফার্মে চাকুরী করতেন। পরে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে স্নাতক পাস করেন। যদিও তিনি ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করার আগেই নিজেকে মেরিন একাডেমীতে যুক্ত করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ থাকে পড়াশোনা শেষ করার তাগিদ দেন।

এ সম্পর্কে মেরিনা বলেন, আমি সবসময় আমার জীবনে উল্লেখযোগ্য কিছু একটা করতে চেয়েছি। আমি চেয়েছি এমন একটা গ্রুপের হয়ে কাজ করতে যারা জীবন বাজি রাখতে কার্পণ্য করবে না। আমি মনে করি, মেরিন একাডেমীর চেয়ে ভালো কিছু আমার জন্য হতে পারে না।

সম্মুখযুদ্ধে প্লাটুনকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য কোয়ান্টিকো, ভার্জিনিয়াতে ১৩ সপ্তাহের একটি কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। যদিও প্রায় ১২ জনের মত নারী ঐ ট্রেনিংটি নিচ্ছিলেন। কিন্তু মাত্র ২ জন শেষ পর্যন্ত পাস করেন। মেরিনা তাদের মধ্যে অন্যতম।

২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত সরাসরি যুদ্ধে মার্কিন সৈন্যবাহিনীর সকল ক্ষেত্রে নারী নেতৃত্ব নিষিদ্ধ ছিল। ২০১৬ সালে নিষেধাজ্ঞাটি তুলে দেন সেসময়কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এরপর সকল ক্ষেত্রেই সম্মুখ যুদ্ধে নারী কমান্ডার দেয়া হলেও বাদ ছিল মেরিন সৈন্যবিভাগটি। এবার সেক্ষেত্রটিও পূর্ণ হলো। ১.৩ মিলিয়ন মার্কিন সেনার ১৫ শতাংশই বর্তমানে নারী।

মেরিন একাডেমীতে নারী সেনাদের ১০০ বছর পূর্তি

এ বছরই মেরিনে যোগদান করা নারী সেনাদলের ১০০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১০০ বছর আগে ১৩ এপ্রিল ১৯১৮ সালে প্রথম নারী সেনা হিসেবে মেরিনে যোগদান করেন অপা মে জনসন। সেদিনের পর থেকেই মেরিনে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষিত করা হয়। নারীদের যখন ভোটাধিকার ছিল না তখন মেরিন যোগদান করে ইতিহাস রচনা করেছিলেন অপা জনসন। তিনি সেখানে ক্লার্ক হিসেবে নিয়োজিত হন। 

২০০১ সাল থেকে মেরিনে প্রায় ১৫০০০ হাজার মেরিন নারী সৈনিক ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধে কাজ করে গেছেন। এরই মধ্যে ১০ জন মেরিন নারী সেনা যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হওয়া প্রথম মেরিন নারী সেনা ছিলেন হলি সার্লটে। 

আর্মি, নেভী, এয়ারফোর্স ও মেরিনের মধ্যে সবচেয়ে কম সংখ্যক মাত্র ৮ শতাংশ নারী মেরিনে নিয়োজিত।