নোবেলজয়ী প্রথম নারী বিজ্ঞানী মারি ক্যুরি
প্রকাশ | ০৪ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৩৮
মারি ক্যুরি (Marie Curie) প্রথম নারী বিজ্ঞানী যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এই ফরাসি বিজ্ঞানী ১৯০৩ সালে তেজস্ক্রিয়তার উপর গবেষণার জন্য তার স্বামী পিয়ের ক্যুরি এবং তেজস্ক্রিয়তার আবিষ্কারক অঁরি বেকেরেলের সাথে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। সেই ছিলো প্রথম নারী বিজ্ঞানী যে বিজ্ঞানের দুইটি ভিন্ন শাখায় দুইবার নোবেল পুরস্কার জেতেন। সে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রথম নারী অধ্যাপক ছিলেন এবং সেই ছিল প্রথম নারী যার অসামান্য মেধার কারণে ১৯৯৫ সালে প্যান্থিয়নে সমাহিত করা হয়।
মারি ক্যুরি ১৮৬৭ সালের ৭ নভেম্বর পোল্যান্ডের ওয়ার্সাতে জন্মগ্রহণ করেন, যেটি তখন রাশিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ ছিলো। মারি কুরি ওয়ার্সার গোপন ভাসমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছিলেন এবং ওয়ার্সাতেই তার ব্যবহারিক বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন। ১৮৯১ সালে ২৪ বছর বয়সে সে তার বড় বোন ব্রোনিস্লাভাকে অনুসরণ করে প্যারিসে পড়তে যান। সেখানেই সে তার পরবর্তী বৈজ্ঞানিক কাজ পরিচালিত করেছিলেন। ১৯০৩ সালে মারি কুরি তার স্বামী পিয়েরে কুরি এবং পদার্থবিদ হেনরি বেকেরেলের সাথে পদার্থ বিদ্যায় নোবেল পুরস্কার জেতেন। তিনি এককভাবে ১৯১১ সালে রসায়নেও নোবেল পুরস্কার জেতেন।
পদার্থবিজ্ঞানে তিনি নোবেল পান তেজষ্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করার জন্য। আর রসায়নে নোবেল পান পিচব্লেন্ড থেকে রেডিয়াম পৃথক করার জন্য।
ক্যুরি ১৯৩৪ সালে শেষবারের মত পোল্যান্ড যান। এর অল্প কয়েক মাস পরে, ১৯৩৪ সালের ৪ জুলাই তারিখে হাউতে-সাভই এর প্যাজ্জি এর সাঞ্চেল্লেমজ স্যানাটরিয়ামে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে সেকাউক্সের সমাধিস্থলে তাঁর জামাই পিয়েরের পাশে সমাহিত করা হয়। ৬০ বছর পর, ১৯৯৫ সালে তাঁদের অবদানকে সম্মান জানানোর অংশ হিসেবে উভয়ের দেহাবশেষ প্যান্থিওনে স্থানান্তর করা হয়। তিনি হয়ে যান প্রথম- এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র নারী যিনি নিজ যোগ্যতার ভিত্তিতে প্যান্থিওনে সমাহিত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন।
তেজস্ক্রিয় দূষণের মাত্রার জন্য তাঁর যতগুলো গবেষণা পত্র ১৮৯০ সাল থেকে ছিল সেগুলো নাড়াচাড়া করা অত্যন্ত বিপজ্জনক মনে করা হয়। এমনকি তাঁর রান্নার বইও উচ্চ মাত্রায় তেজস্ক্রিয়। তাঁর গবেষণা পত্রগুলো সীসা-ঘেরা বাক্সে রাখা হয়েছে, এবং যারা সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে যাবেন তাঁদের অবশ্যই নিরাপদ কাপড় পরিধান করতে হবে।
জীবনের সর্বশেষ বছরে তিনি একটি বই লিখার কাজ করেছিলেন, তেজস্ক্রিয়তা, যা ১৯৩৫ সালে তাঁর মৃত্যুর পরপরই প্রকাশ করা হয়।
মারি ক্যুরি সম্পর্কে আরো বিস্তারিতভাবে জানতে পড়ুন ‘দুইবার নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মারি ক্যুরি’