সাতক্ষীরায় আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে ‘প্রকৃতি বন্ধন’
প্রকাশ | ২২ মে ২০১৭, ১৩:০৪
সাতক্ষীরায় ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মধ্যদিয়ে প্রাণ ও প্রকৃতির বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতিবাদে ‘প্রকৃতি বন্ধন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২২ মে (সোমবার) সকাল সাড়ে ৯টায় আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস ও প্রাণ ও প্রকৃতির বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিম এই প্রকৃতি বন্ধনের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সদস্যরা মুখে বিভিন্ন প্রাণী, গাছ ও নদীর মুখোশ পরে নির্ভরশীল অন্যান্য প্রাণ ও প্রকৃতির প্রতি প্রতীকী শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
এতে মাছের মুখোশ পরে তাপস বলে, আমি মাছ। আমি নদী ও জলাশয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। নদী বেঁচে থাকুক।
বিউটি পাখির মুখোশ পরে বলে, আমি পাখি। আমি গাছের কাছে কৃতজ্ঞ। গাছ না বাঁচলে আমি খাবো কী? থাকবো কোথায়?
মুরাদ বাঘের মুখোশ পরে বলে, আমি বাঘ। আমি বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাকে জাতীয় পশুর মর্যাদা দিয়েছে।
নাছির গরুর মুখোশ পরে বলে, আমি গরু। আমি আমন ধানের খড়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। এসব খেয়েই আমার ক্ষুধা দূর হয়।
ওমর ফারুক বলে, আমি আমন ধান। আমি মাটির কাছে কৃতজ্ঞ। এই মাটিই আমাকে বড় হওয়ার রসদ জোগায়।
বাহলুল করিম বলে, আমি গাছ। আমি মানুষসহ সকল প্রাণীর কাছেই কৃতজ্ঞ। তারা বুক ভরে আমার অক্সিজেন নেয়।
সৃষ্টি বলে, আমি প্রজাপতি। আমি মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাকে নিয়ে নাচ ও গান করে মানুষ।
রনি বলে, আমি নদী। আমি মাছ, মানুষ, ডলফিন, কুমীর সবার কাছে কৃতজ্ঞ। তারা আমার শরীরে সাঁতার কাটে, নৌকা বায়। মানুষ আমাকে নিয়ে গান গায়, সিনেমা বানায়।
ফজলু বলে, আমি মানুষ, আমি গাছের কাছে কৃতজ্ঞ, গাছ অক্সিজেন না দিলে আমি বেঁচে থাকতে পারতাম না।
অনুষ্ঠানে এভাবেই বাস্তুসংস্থানে পারস্পারিক নির্ভরশীলতার সম্পর্ককে স্বীকার করে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়।
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সভাপতি শেখ তানজির আহমেদের সঞ্চালনায় ব্যতিক্রমধর্মী এই অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করে আরও বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, মানবাধিকার সংগঠন স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধবচন্দ্র দত্ত, সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, তুজুলপুর কৃষক ক্লাবের সভাপতি ইয়ারব হোসেন, বারসিকের গবেষণা সহকারী সাইদুর রহমান প্রমুখ।
এদিকে, সাতক্ষীরার শ্যামনগরেও আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস এবং প্রাণ ও প্রকৃতির বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে প্রকৃতি বন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন শ্যামনগরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদিদ।
বক্তব্য রাখেন, বারসিক কর্মকর্তা পার্থ সারথী পাল, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের সভাপতি মারুফ হোসেন মিলন, সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান প্রমুখ।