বন্যপ্রাণী কোন অশুভ শক্তির প্রতীক নয়
প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০১৭, ০২:০৬
ইতিহাসের বাস্তবতায় ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ মার্চ বা ১১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া গণনা থেকে কার্যকর ধরা হয় বাংলা বর্ষ। ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ নভেম্বর তারিখ থেকে অর্থাৎ সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহনের তারিখ থেকে এটি বাংলা বর্ষ হিসেবে পরিচিতি পায়। বাংলা মাসের নামগুলো এসেছে আসলে বিভিন্ন নক্ষত্রের নাম থেকে বিশাখা থেকে বৈশাখ, জেষ্ঠা থেকে জৈষ্ঠ, আষাঢ়া থেকে আষাঢ়, শ্রবনা থেকে শ্রাবন, ভাদ্রপদ থেকে ভাদ্র, কৃত্তিকা থেকে কার্ত্তিক, অগ্রইহনী থেকে অগ্রহায়ন, পূষ্যা থেকে পৌষ, মঘা থেকে মাঘ, ফল্গুনি থেকে ফাল্গুন এবং চিত্রা থেকে চৈত্র। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৪ই এপ্রিল নববর্ষ পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত এ দিনটিকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে যদিও বাংলার সাথে হিজরী ও খ্রিষ্টীয় সনের মৌলিক কিছু পার্থক্য রয়েছে। হিজরী সনের নতুন তারিখ শুরু হয় সন্ধায় নতুন চাঁদ আগমনের মধ্যে দিয়ে, ইংরেজিতে দিন শুরু হয় মধ্যরাতে আর বাংলা সনের শুরু হয় ভোরের সূর্য উঠার সাথে।
ভোরের আলোতে ছোট পরিসরে বর্ষবরণ উৎসব বা কৃষি উৎসব প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত ছিল। সে উৎসবটি ছিল পারিবারিক মঙ্গল কামনার উৎসব। তাতে সামাজিক ভূমিকা বা সামাজিক মেলামেশার সুযোগ তেমন ছিল না। তবে কৃষিভিত্তিক গ্রাম বাংলায় গরুর দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগের লড়াই, হা-ডু-ডু ও লাঠি খেলা ছিল। এসবই ছিল বাংলার গ্রামীণ নববর্ষের প্রথম দিনের উৎসবের উপাদান। এছাড়া উত্তরবঙ্গে ঠাকুরগাঁও দিনাজপুরসহ কিছু এলাকায় ’গমীরা’ নামের একটি উৎসব আয়োজন করা হতো। এতে পশু-পাখি এবং নানা প্রাণীর মুখোশ পরে মিছিল বের হতো। এই মিছিলের লক্ষ্য ছিল আনন্দ এবং চৈত্র সংক্রান্তিতে ’চড়ক’ উৎসব সাথে শিবের গাজন ও গম্ভিরা গান ছিল নববর্ষ এবং চৈত্র সংক্রান্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
পাঠক একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র-ছাত্রীদের এখনকার মঙ্গল শোভাযাত্রায় অধুনিকতার ছোয়াঁ। শোভাযাত্রায় বিশ্বব্যাপী কার্নিভালের ধরণ লক্ষ্য করা গেলেও ঠিকই জায়গা করে নিয়েছে ’গমীরা’ উৎসবের পশু-পাখি এবং প্রাণী মুখোশের সেই প্রাচীন আঙ্গিক। তবে তা নতুন তাৎপর্য, অর্থ আবার কখনও বা অর্থহীন হয়ে উঠছে অতীত বর্তমানের মিশ্রনে। প্রাচীনকে আকঁড়ে প্রতি বছর তাই মঙ্গল শোভাযাত্রা অনেক প্রধান্য দিয়েছে এদেশের জীববৈচিত্রকে।
এরশাদের স্বৈরাচারীর আমলে ’রাষ্ট্রধর্ম’ প্রবর্তনের প্রতিবাদে প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। সেই থেকে বাঙালির সাংস্কৃতিক আঙ্গিনা থেকে রাজনৈতিক দুরাচারিতার প্রতিবাদ সূচিত হয়েছিল সে যাত্রায়। রূপান্তরিত হয়েছিল অশুভকে দূরে ঠেলে মঙ্গলের জয়গানের মিছিলে। অন্যদিকে ১৯৬৭ সাল থেকে পহেলা বৈশাখের মূল অনুষ্ঠান সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট পালন করে। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠির নিপীড়ন ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে শুরুটা থাকলেও প্রতিবছর গানের ভাষাতে ছায়ানট বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করে থাকে সকল অশুভ’র বিরুদ্ধে। তাই গান আর পশু-পাখির আদল নিয়ে পিছনে ফেলে আসা বর্ষবরণগুলো ছিল সত্য আনন্দের মিলন মেলা।
১৯৮৯ সালে প্রথম আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল পাপেট, ঘোড়া, হাতি। ১৯৯০ সালের আনন্দ শোভাযাত্রায়ও নানা ধরনের প্রতিকৃতি স্থান পায়। ১৯৯১ সালে চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিল্পীদের উদ্যোগে সে শোভাযাত্রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভাইস চান্সেলর, বিশিষ্ট লেখক, শিল্পিসহ সাধারণ নাগরিক অংশ নেয়। শোভাযাত্রায় স্থান পায় বিশালকায় হাতি, বাঘের প্রতিকৃতি কারুকর্ম। কৃত্রিম ঢাক আর অসংখ্য মুখোশখচিত প্লাকার্ডসহ মিছিলটি নাচে গানে উৎফুল্ল পরিবেশ সৃষ্টি করে। ১৯৯২ সালের আনন্দ শোভাযাত্রার সম্মুখে বিভিন্ন রঙের পোশাক পরিহিত ছাত্র-ছাত্রীদের কাঁধে ছিল বিরাট আকারের কুমির। বাঁশ ও বহু বর্ণের কাপড় দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল কুমিরটি। ১৯৯৩ সালে ১৪০০ সাল উদযাপন কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে বিশাল শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রার আকর্ষণ ছিলো বাঘ, হাতি, ময়ুর, ঘোড়া, পাখিসহ বিভিন্ন ধরনের মুখোশ।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৪১৮ সালের নববর্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রাটির আয়োজন ছিল একটু ভিন্ন ধাঁচের। বিশাল আকৃতির একটি কুমির। প্রায় ৩৫ ফুট লম্বা। জলের নয় ডাঙ্গার কুমির ছিল সেটি। কাঠ, বাঁশ, বেত দিয়ে তৈরি কুমিরটি রাস্তায় নেমেছিল বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায়। শুধু কুমির নয়, রাজা-রানীর মুখোশ, বাঘ, ময়ুর, বানর ও ২৫ ফুট উচ্চতার কাকাতুয়া পাখিসহ ছিল জীবজন্তুর লোকজ অবকাঠামো। তবে প্রধান আকর্ষণ ছিল কুমিরটি। কারণ, তা সাধারণ কুমির নয় ’যুদ্ধাপরাধীর প্রতীক’। কুমিররূপী যুদ্ধাপরাধীরা এদেশের মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে, ধ্বংস করেছে জাতির সম্পদ। তেমনি কুমিররূপী যুদ্ধাপরাধীদের হাজির করেছিল চারুকলা অনুষদের ছাত্র-ছাত্রীরা। যুদ্ধপরাধীর প্রতীক হিসেবে কুৎসিত সে কুমিরকে তাই দেখানো হয়েছিল দু’জন বাঙালির (একজন পুরুষ অন্যজন নারী) পদতলে।
উপরের বর্ষবরণের শোভাযাত্রার কিছু তথ্য টেনেছি একটি ভুল ধারণাকে ধারণ করার প্রতিবাদে। আগে বর্ষবরণের আনন্দ মিছিলে ছিল কৃষি, কৃষক ও প্রকৃতির জয়গান। মানুষের বসবাস প্রকৃতির কোলে, তাই প্রকৃতির দায়কে সম্মান করে মঙ্গল শোভাযাত্রায় তাদের আসন হয় অনেক উপরে। ১৪১৮ সালের বর্ষবরণের শোভাযাত্রায় মৌলিক কোন চিন্তা না করে কুমিরকে মানুষখেকো বা ‘যুদ্ধাপরাধীর প্রতিক’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল শোভাযাত্রা কমিটি। প্রাচীনকাল থেকে মানুষ ও পরিবেশের বন্ধুত্বে একটি বৈরী সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে ঐ মঙ্গল শোভাযাত্রা। যুদ্ধাপরাধী নামক দুশ্চরিত্রের একটি দলকে অমঙ্গলকর আখ্যা দিতে কুমির চরিত্রের ব্যবহার ছিল নিছক ছেলে খেলার আয়োজন। তারপরও শোভাযাত্রায় আমি উপস্থিত ছিলাম কারণ আমি মঙ্গলের পক্ষের মানুষ। কিন্তু কুমিরকে প্রতিকী না বানিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীর প্রতিকী বুঝাতে ভিন্ন পন্থা অনুসরণ করা যেতো। সংবাদকর্মী প্রাণিবিদ, প্রকৃতি সংরক্ষক, প্রকৃতি প্রেমিকেরা সারাবছর ধরে প্রকৃতি বাঁচাও বা কুমির বাঁচানোর আন্দোলন করছে। অথচ ১৪১৮ সালের মঙ্গল কামনার শোভাযাত্রাটি কয়েকঘন্টার ব্যবধানে রুদ্ধ করেছে সারা বছরের প্রকৃতি সংরক্ষণ বা সচেতনতার প্রক্রিয়াকে।
এ জাতীয় ভুল করার আগে পূর্বসূরীদের কাছ থেকে একটু-আধটু পরামর্শ নিলে শোভাযাত্রার মান আরও বাড়তে পারে। প্রতিবাদের স্বরে এমন কথাই বলেছিলেন কয়েকজন চিত্রশিল্পী। তারা আরও বলেন, ‘শোভাযাত্রা নিছক একটা ছেলে খেলা নয়। এতো মানুষকে এক কাতারে নিয়ে আসার বিষয়টি একদিনে রচিত হয়নি, তাই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মঙ্গলের পথে ধাবিত করতে হবে সঠিকভাবে। প্রকৃতির কোন অমঙ্গল যাতে না হয় নিজেদের মঙ্গল কামনা করতে গিয়ে’। এছাড়া একটি ক্যানভাসে রঙের সাথে খেলা করার মূল উপাদান হলো প্রকৃতি। তাই প্রকৃতি ধ্বংস হলে আমাদের দেখার উপাদান নষ্ট হয়ে যাবে। সেই সাথে পূর্বের বর্ষবরণের ইতিহাস মনে রাখার কথাও উঠে আসে।
কুমিরকে প্রতিকী বানানোর প্রতিবাদে এমন লেখার পক্ষে অনেকে একমত হবেন না। কিন্তু বুদ্ধি, বিবেচনা, যুক্তি সেই সাথে বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনার কাছে আপনাকে এক মূহুর্ত ভাবতে হবে। একজন সাংবাদিক হিসেবে সারা বছর যে ধরনের সংবাদ পরিবেশন করেছি তার প্রায় সবগুলো ছিল পরিবেশ সংক্রান্ত। আমার মতো একই কাতারে রয়েছে আরও অসংখ্য সাংবাদিক, লেখক ও সাধারণ নাগরিক। বিশেষ করে আমি কুমির নিয়ে অনেক সংবাদ তৈরী করেছি। কারণ আমি বিশ্বাস করি তাদের বাঁচাতে পারলে আামরা বেঁচে থাকবো। সভা, সেমিনারসহ অনেক স্থানে বলছি এদেশের কুমিরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণি সংরক্ষনের কথা। বলেছি এদের বাঁচতে দিন। ওদের সংরক্ষণ করুন। শুধু আমি নই, সারা বিশ্বে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন এখন অনেক শক্তিশালী। কারণ সবাই জানে ‘ওরা না বাঁচলে আমরা টিকতে পারবো না’। শোভাযাত্রায় কোন শ্রেনীর কুমিরকে খল-নায়কের চরিত্র দিয়েছিল তা অজানা থাকলেও প্রশ্ন থেকে যায়, কুমির কি আছে আমাদের দেশে? কুমির নিজেই যখন অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে সেখানে কুমিরকে অশুভ শক্তি, অমঙ্গলকর আখ্যা দিয়ে একরকম কুমির হত্যার কথা বলেছে শোভাযাত্রাটি।
তিন প্রজাতি কুমিরের মধ্যে মিঠা পানির কুমির অনেক আগেই বিলুপ্ত আর ঘড়িয়াল নামক কুমিরটি বিলুপ্ত হয়েছে শুধু ঘোষণার অপেক্ষায়। বাকি থাকলো সুন্দরবন এলাকায় নোনা পানির কুমির সেটিও রয়েছে যৎসামান্য। বলা হয়ে থাকে যে নদীতে কুমির থাকে সে নদীতে মাছ থাকে বেশি। কারণ, কুমির মাছ রক্ষার ভারসাম্যতা বজায় রাখে। কুমিরের খাদ্য তালিকার প্রথম সারিতে রয়েছে নদীর রাক্ষুসে মাছগুলো। খাদ্য শৃঙ্খলে রাক্ষুসে মাছ থাকলে বাকি সকল প্রজাতির মাছ থাকবে হুমকির মুখে। তাই কুমির সে রাক্ষুসে মাছ খেয়ে বাঁচিয়ে দেয় শত শত মাছের প্রজাতি। মাছে-ভাতে বাঙালি প্রবাদটি বর্তমানে লবন-ভাতে পরিণত হওয়ার পেছনে কুমির না থাকার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নদী দখলকারীরা নদীকে রূপান্তরিত করেছে নিজের বসত-ভিটে হিসেবে। হরণকারীরা জানে কুমিররের বংশ শেষ করতে পারলে নদী হবে পৈত্রিক সম্পত্তি। নিজেদের সুখ ভোগ ছাড়াও নদীতে নিয়ন্ত্রনহীন মাছ শিকারে সুবিধা করতে নির্মমভাবে হত্যা করছে কুমির প্রজাতিকে। স্বাধীনতার আগে পরে ব্যাপকভাবে শত শত কুমির হত্যা হয়েছে এদেশের নদ-নদীতে। প্রাকৃতিক অভিশাপ বড়ই নির্মম। এর প্রতিশোধের একটি হলো মাছ শূণ্য নদী আর নদী পরিণত হয়েছে খালে। নদী মাতৃকার বাংলাদেশের বিরূপ প্রকৃতির এ যেন এক নতুন রূপ।
আগে বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রায় পশু-পাখিদের আসন ছিল সম্মানজনক স্থানে। এমন সম্মান পশুপাখিরা নিজ গুনেই অর্জন করেছে। যেমন পেঁচা কৃষকের একজন পরম বন্ধু। আবার কারও কাছে দেবতা। ইঁদুরের মুখ থেকে জমির অর্ধেক ধান বাঁচিয়ে দেয় অন্ধকার মায়াবী চোখের পেঁচা। আর পাখি তৈরী করে প্রাকৃতিক বন। এক স্থান থেকে আরেক স্থানে বীজ বহন করে সৃষ্টি করে নতুন বন। পাখি যে গাছে বসে না সে গোছটি যে আমাদের বন্ধু না সেটিও জানান দেয় পাখি সম্প্রদায়। সে কারনে দেশী গাছ রোপনের কথা ও বিদেশী গাছ উপড়ানোর কথা নীরবে বলে যাই মানুষের কল্যাণে। দেশভক্তি ও শ্রদ্ধার বিষয়টি মানুষই কেবল নয় পশু-পাখিদের মধ্যেও এমন গুণাবলী লক্ষ্য করা যায়। আর খাদ্য শৃঙ্খলের শিখরে থাকা সুন্দরবনের ‘বাংলার বাঘ’ না থাকলে বাঙালিদের শৌর্য-বীর্য হারাবে।
সকল পশুপাখি মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে সকলের অগোচরে একটি প্রাকৃতিক নিয়মে। তাই শোভাযাত্রায় বন্যপ্রাণীদের অশুভ প্রতিকী নয়, বরং তাদের সম্মান জানাতে হবে নিজেদের মঙ্গল কামনায়। বাংলা সনের তাই প্রথম দিনটি হতে পারে ’বন্যপ্রাণী সংরক্ষন দিবস’ কেননা বর্ষবরণের মতো এতো পরিমান বন্যপ্রাণীর প্রতিকৃতি আর তাদের প্রতি সম্মান দেখানোর বিষয়টি আর কোন দিবসে দেখা যায় না।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী বিভাগ, একাত্তর টেলিভিশন