পদ্মাপাড়ে নদী সুরক্ষা যাত্রা ও সমাবেশ
প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৮:১১
পদ্মা নদীকে অপমৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে নদী সুরক্ষা যাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পিরিজপুর গ্রামে পদ্মার মৎস্য অভয়াশ্রমের পাশে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এর আগে নেপালের গন্ডাক ও ভারতের গঙ্গাপাড়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
‘ওয়াটার ওয়াক’ নামের এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে পদ্মা নদীর পাড়ে একটি র্যালি বের করা হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে স্থানীয় বাসিন্দাদের নদী কেন্দ্রীক নানা সমস্যার কথা শোনেন নেপাল ও বাংলাদেশের নদী বিশেজ্ঞরা।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন বেসরকারি সংস্থা অ্যাকসন এইডের কর্মকর্তা শমসের আলী। এ ছাড়াও অন্যদের মধ্যে হালদা নদী রক্ষা আন্দোলনের পুরোধা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবরিয়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মোশাররফ হোসেন, নেপালের মহিলা অধিকার মঞ্চের কল্পনা বিন্দু, গন্ডাক নদী রক্ষা কমিটির সহ-সভাপতি পবিত্রা নিউপালে, বেসরকারি সংস্থা সচেতনের ফেলো খায়রুল মতিন পিন্টু, পদ্মা নদী অভয়াশ্রমের উদ্যোক্তা শফিউল ইসলাম মুক্তা সমাবেশে বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, ফারাক্কা বাঁধের কারণে নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভারতও ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। নেপালের হিমালয় থেকে গন্ডাক নদীর মাধ্যমে পানি ভারতের গঙ্গায় আসে। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের কারণে ভরা মৌসুমে গন্ডাক নদী থেকে পানি আসতে পারছে না। ফলে ভারত ও নেপালে দেখা দিচ্ছে বন্যা। এর বিপরীতে পানিশূন্যতায় ভুগছে পদ্মা। ফলে এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকা ও প্রকৃতিতে চরম বিরুপ প্রভাব পড়ছে। ওদিকে বন্যার কারণে ভারত ও নেপালে বহু সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে। বন্যার সময় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবে মারাও যাচ্ছেন অনেক মানুষ।
বেসরকারি সংস্থা সচেতনের নির্বাহী পরিচালক হাসিনুল ইসলাম চুন্নু সমাবেশ পরিচালনা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় প্রবীণ জেলে আবদুস সামাদ। গোদাগাড়ীর এ সমাবেশের পরে দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর কুমারপাড়ায় পদ্মাপাড়ে আরেকটি সমাবেশ করা হয়। এর আগে গত ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারী নেপালের গন্ডাক ও ১৪ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী ভারতের গঙ্গা নদীর পাড়ে এই সমাবেশ করা হয়।
‘ওয়াটার কমন্স ফোরাম’ নদীর অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যেয়ে ‘নদী সুরক্ষা যাত্রা-২০১৭’ শুরু করেছে। এই ফোরামের সদস্য হিসেবে আছে বেসরকারি সংস্থা সচেতন, বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টা, পরিবর্তন, আভাস বিডিও, সার্প, এসকেএস, নারী-মুক্তি, ভার্ড, ইউএসএস ও বিএনসিএন। বৃহস্পতিবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে সম্মেলনের মাধ্যমে নদী সুরক্ষা যাত্রার সমাপ্তি হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তিন দেশের সমাবেশ থেকে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের কাছ থেকে নদী কেন্দ্রীক যে সমস্যার কথা জানা গেছে, তা তিন দেশের সরকারকেই অবহিত করা হবে। ‘১৯৯৭ সালের আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহে নৌ-চলাচল বহির্ভুত ব্যবহার সংক্রান্ত আইন’ বাস্তবায়নে তারা তিন দেশের সরকারকেই তাগাদা দেবেন।