ছুরির নিচ থেকে ফিরল মদনটাক

প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৪:১১

জাগরণীয়া ডেস্ক

দেশে বিলুপ্ত পাখিদের মধ্যে ‘মদনটাক’ একটি। এখন আর সচরাচর এই পাখি দেখা যায় না। মদনটাক জলচর পাখি। এর দুটি প্রজাতি। বাংলাদেশ থেকে ‘বড় মদনটাক’ প্রজাতিটি অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে খুবই কম সংখ্যক ‘ছোট মদনটাক’ এখনও টিকে আছে।

এমনই এক মদনটাককে ছুরির নিচ থেকে উদ্ধার করেছেন কেতাব আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তি। রাজশাহীর পবা উপজেলার হাড়–পুরে তার বাড়ি। গত ৫ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) পথভুলে তাদের গ্রামে চলে আসে এই মদনটাক। কেতাব দেখেন, স্থানীয় শিশু-কিশোররা পাখিটাকে জবাই করে বনভোজনের আয়োজন করতে ব্যস্ত। তাদেরকে বুঝিয়ে পাখিটাকে নিজের হেফাজতে নেন কেতাব। এরপর তিনি রাজশাহীর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগে খবর দেন। সোমবার রাতে পাখিটাকে নিয়ে যান বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ জানান, মদনটাক সাধারণত জলচর পাখি। জলাশয়ের পাশেই থাকে। পথ ভুলে সে লোকালয়ে চলে আসে। তারপর উপযুক্ত খাবারের অভাবে এটি অনেকটাই দুর্বল ছিল। উড়তে পারছিল না। তবে পরিচর্যা ও চিকিৎসা দেয়ার পর এটি এখন সুস্থ। পাখা মেলতে পারছে।

সহকারী বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা এসএম রুহুল আমিন জানান, পাখিটাকে এখন পবা বন বিভাগের নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। পাখিটা মাছ খেতে খুব ভালোবাসে। তাই তাকে মাছই খেতে দেয়া হচ্ছে। সুন্দরবন হলো এই পাখির আদি নিবাস। আরও দু’একদিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর পাখিটাকে সেখানেই পাঠানো হবে।

বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা আমজাদ আলী জানান, দেশে মদনটাক বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে। পাখিটার পিঠের দিক ঘন কালো। দেহের নিচের দিক সাদা। মুখের চামড়া ও ঘাড় লালচে। পা লম্বা। মাথায় টাক। জলমগ্ন মাঠ, খাল, জলময় বন, প্যারাবন ও মোহনায় একা বা জোড়ায় বিচরণ করে। অগভীর পানিতে ধীরে হেঁটে এরা মাছসহ ছোট ছোট প্রাণী খায়। সাধারণত বড় গাছে ডালপালা দিয়ে বাসা বানায়।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০১১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনের কলাগাছিয়ায় একটি ছোট মদনটাক দেখা যায়। ২০১৩ সালের এপ্রিলে দুটি ছোট মদনটাক চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় একটি মদনটাক পাওয়া যায়। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর পুঠিয়া থেকে একটি মদনটাক উদ্ধার করা হয়। এর এক বছর পর রাজশাহী অঞ্চলে আবারো এই পাখির দেখা মিলল।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত