বজ্রপাত ঠেকাতে দশলাখ তালগাছ
প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:৩১
বজ্রপাত ঠেকাতে সারাদেশে ১০ লাখ তাল গাছ রোপণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ কার্যক্রম শুরুর জন্য কাজের বিনিময়ে খাদ্য ও কাজের বিনিময়ে টাকা কর্মসূচির নীতিমালাও পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সারাদেশে কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
সারাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর শিকার মানুষের সঠিক কোন পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১০ সালে বজ্রপাতে দেশে ৯৯ জন মারা গেছে। এ ছাড়া ২০১১ সালে ১১৪ জন, ২০১২ সালে ১৩৬ জন, ২০১৩ সালে ১২৩ জন, ২০১৪ সালে ১১২ জন, ২০১৫ সালে বজ্রপাতে মারা গেছে ৫১ জন।
অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তালিকায় ২০১০ সাল থেকে দেড় হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছেন বজ্রপাতে।
দুর্যোগ ফোরামের গবেষণায়, ২০১১ সালে ১৭৯ জন মারা যায়, আর ২০১৫ সালে ২৭৪ জন।
গতবছর দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর শিকার মানুষের বেশিরভাগই হাওর অঞ্চলের ৯ জেলার। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ছিল সুনামগঞ্জে। বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চল ছাড়াও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ফসলের মাঠে বা ফাঁকা জায়গায়।
তবে ২০১৬ সালে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে সরকারের শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিসংখ্যানে এ বছর মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৩ জন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ এবং থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের অভিজ্ঞতার আলোকে বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে তালগাছ রোপণের সিদ্ধান্ত নেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
নিজের মাথায় বজ্রপাতের আঘাত নিয়ে যেসব বড় গাছ বজ্রপাতের থাবা থেকে মানুষকে রক্ষা করে তার অন্যতম তালগাছ। থাইল্যান্ডে তালগাছ রোপণের পর বজ্রপাতে মৃত্যু কমেছে এমন তথ্য যাচাই করে বাংলাদেশেও তালগাছ রোপণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব জানান, হাওরসহ বড় জলাশয়ে বিশেষ ধরণের টাওয়ার নির্মাণের জন্য ভিয়েতনামের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সব ভবনে বজ্রপাতসহনীয় বিশেষ ধাতব ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে বিল্ডিং কোড সংশোধনের জন্য আগামি মাসে বিল আনা হবে সংসদে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বনভূমি উজাড়করণের কারণেই বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটছে।