জিকা নিয়ে জরুরি অবস্থা তুলে নিল জাতিসংঘ
প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৬, ১৭:৩১
জিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা তুলে নিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের বিশ্ব ও স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তাদের ঘোষণায় বলেছে, আন্তর্জাতিক চিকিৎসায় মশাবাহিত জিকা ভাইরাস আর জরুরি কিছু নয়।
নয় মাস আগে জিকা বিষয়ে জারি করা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলেও ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, তাই বলে শেষ হয়ে যায়নি জিকা।
বিশ্বের ৩০টি দেশে জিকার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। গর্ভে থাকা অবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে নবজাতকের মাথা অস্বাভাকি রকম ছোট হয়, ত্রুটি দেখা দেয় মস্তিষ্কের গঠনে। এ জাতীয় রোগকে বলে মাইক্রোসেফালি।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, শুধু ব্রাজিলে জিকায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১০০। জিকা ভাইরাস মূলত মশার মাধ্যমে ছড়ায়। তবে আক্রান্ত ব্যক্তি সঙ্গে দৈহিক মিলনের সময়ও ছড়িয়ে থাকে এ জাতীয় ভাইরাস।
জিকায় আক্রান্ত হলে মানুষ মারাও যায়। কোনো সমাজে প্রতি পাঁচজনে একজন আক্রান্ত হলে তাকে জিকার প্রাদুর্ভাব বলা হয়ে থাকে। জিকায় আক্রান্ত হলে জ্বর, ফুসকুড়ি ও শরীরের বিভিন্ন গিটে ব্যথা হয়।
ভাইরাস বিষয়ে ডব্লিউএইচওর ইমারজেন্সি কমিটির প্রধান ডা. ডেভিড হেয়ম্যান বলেছেন, জিকা এখনো ‘তাৎপর্যপূর্ণ ও দীর্ঘস্থায়ী’ হুমকি। তবে দীর্ঘমেয়াদি জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন তারা। লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দীপাঞ্চলে জিকার ব্যাপক প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে। পরে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি অবস্থা জারি করে।
১৯৪৭ সালে উগান্ডায় বানরের দেহে প্রথম ধরা পড়ে জিকা ভাইরাস। ১৯৫৪ সালে নাইজেরিয়ায় প্রথম মানবদেহে জিকা শনাক্ত হয়। এরপর আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭৭-১৯৭৮ সালে পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় জিকা ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। ২০০৭ সালে মাইক্রোনেশিয়া, ২০১৩ সালে ফ্রেন্স পলিনেশিয়া ও ২০১৫ সালে ব্রাজিলে দেখা যায় জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব।
২০১৫ সালের আগে খুব বেশি বিপজ্জনক ছিল না জিকার প্রাদুর্ভাব। কিন্তু ২০১৫ সালে লাতিন আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে বেশ কিছু মানুষ মারা যায়।