নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে টাকার বিনিময়ে ইলিশ ধরা
প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০১৬, ১৭:৪৪
![](/assets/news_photos/2016/10/24/image-3429.jpg)
প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই টাকার বিনিময়ে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ব্যাপকভাবে ইলিশ শিকার চলছে।
মা ইলিশ মাছের ডিম ছাড়ার সময় হিসাব করে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত এ ২০ দিন সারা দেশে মা ইলিশ ধরা, বিক্রি ও মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। শরীয়তপুরে গত দশ দিনে শতাধিক জেলেকে জেল-জরিমানা করেছে মৎস্য বিভাগের ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু দিনের বেলায় মৎস্য বিভাগ মাইকিংসহ টহল চালালেও সন্ধ্যার পর থেকে ছোট-বড় বহু ট্রলার ও নৌকা নিয়ে জেলেরা ইলিশ শিকার করছেন। শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালেরচর থেকে শুরু করে ভেদরগঞ্জ হয়ে গোসাইরহাট উপজেলার জালালপুর পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে এ শিকার চলেছে বলে জানিয়েছেন জেলেরাই।
তারাবুনিয়া স্টেশন বাজারের জেলে আলী হাচান বেপারী বলেন, “আমরা নদী ভাঙ্গায় সর্বস্ব হারানো মানুষ। ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরা ছাড়া অন্য কোনো কাজ শিখিনি। এখন পদ্মায় প্রচুর ইলিশ ধরা যায়, তাই বেআইনি জানা সত্ত্বেও পেটের অভাবে মাছ ধরে বিক্রি করছি।”
এর জন্য মৎস্য বিভাগ ও অন্যান্য লোকদের কিছু টাকা দিতে হয় বলে দাবি করেন তিনি।
শরীয়তপুর পৌর এলাকার ছায়েদ হাউকার বলেন, “শুক্রবার রাত ১টার সময় শরীয়তপুর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ভেদরগঞ্জের স্টেশন বাজারের আড়তে গিয়ে পাঁচ হালি (২০টি) প্রতিটি এক কেজি ওজনের ইলিশ কিনেছি মাত্র দুই হাজার টাকায়, যা অভিযানের আগেও শরীয়তপুর শহরের ১০ হাজার টাকার কমে ক্রয় করা সম্ভব হয়নি।”
ভেদরগঞ্জের তারাবুনিয়া সরকারকান্দি গ্রামের স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মো. মনিরুল হক বলেন, "প্রশাসনের গাফিলতি ও তাদের অসততার কারণে বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও জেলেরা ইলিশ ধরতে সাহস পাচ্ছে। প্রশাসন সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে দেশের এ সম্পদ ধ্বংস হতো না"।
ইলিশ আহরণের স্থানগুলোতে নিষিদ্ধ সময়ে র্যাব, পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানান তিনি।
শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, "মা ইলিশের প্রজনন সময়ে ইলিশ রক্ষার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তারপরও গোপনে কেউ মাছ শিকার করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিশাল এলাকাজুড়ে পদ্মা-মেঘনা নদী। এখানে লোকবল কম থাকায় আমাদের চাঁদপুর থেকে কোস্ট গার্ডের সহায়তাসহ র্যাব-পুলিশ নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানোর ব্যবস্থা করছি”।
এ পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫৭ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং ৭৫ জনকে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।