বুধবার থেকে ইলিশ ধরা ও বেচাকেনা নিষিদ্ধ
প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৬, ১৩:২৬
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি, জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের সুষ্ঠু প্রজনন নিশ্চিত করতে বুধবার (১২ অক্টোবর) থেকে ইলিশ ধরা, মজুত ও বেচাকেনা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলে মনে করছে দেশের সচেতন মহল।
তারা মনে করছেন, ইলিশ শিকারি বা জেলেদের সাময়িক অসুবিধা হলেও বৃহত্তর স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহ প্রশংসার দাবি রাখে। এটি যথাযথভাবে কার্যকর হলে বাজারে ইলিশ সহজলভ্য হবে ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী ইলিশের চাহিদা মেটাতে পারবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইলিশ গবেষক ও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিএফআরআই) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান বলেন, ইলিশ মাছ সারা বছরই কম বেশি প্রজনন করলেও সবচেয়ে বেশি প্রজনন করে অক্টোবর মাসের (আশ্বিন/কার্তিক) বড় পূর্ণিমার সময়। এ সময় ৬০ শতাংশের বেশি ইলিশই পরিপক্ব ও ডিম ছাড়ার উপযোগী অবস্থায় থাকে। তাই পাঁচটি নির্দিষ্ট এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, অবাধ প্রজনন ও প্রাকৃতিকভাবে অধিক ডিম ও পোনা উৎপাদনের জন্য মৎস্য সংরক্ষণ আইন ১৯৫০-এর অধীনে এ সময়ে ইলিশ শিকার, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত বা কেনাবেচা নিষিদ্ধ করা হয়। আগে বিভিন্ন সময় ১১ দিন বা ১৫ দিন এ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এবার এই সময়সীমা ২২ দিন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইলিশের আবাসস্থল নদী-মোহনার ইকোলজি বিষয়ে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র আরও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
ইলিশের প্রধান চারটি প্রজনন ক্ষেত্র (ঢালচর, মনপুরা মৌলভীরচর ও কালিরচর দ্বীপ) সমন্বিতভাবে প্রায় সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায়ও একই সময় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেও জানান ড. আনিসুর রহমান।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে ২৭টি জেলার নদ-নদী। জেলাগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, খুলনা, কুষ্টিয়া ও রাজশাহী। সেই সঙ্গে দেশের সমুদ্র উপকূল এবং মোহনায়ও এই ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে।