৬০ বছরে ‘অপুর সংসার’
প্রকাশ | ০১ মে ২০১৯, ১৬:১৮
‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রটি অপু ট্রিলোজির শেষ পর্ব । ১৯৫৯ সালের ১ মে মুক্তি পায় সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অপুর সংসার’। এই ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন কিংবদন্তী অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং বিখ্যাত অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর।
চলচ্চিত্রটি নিয়ে পরিচালক সন্দীপ রায় বলেন, অপুর স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপন দেয়া হয় ১৫ থেকে ১৭ বছরের মেয়েদের ছবি চেয়ে। এক হাজারের বেশি ছবি পাওয়া গেলেও ইন্টার্ভিউতে ডাকার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি। খুবই বিপাকে পড়ে যাওয়া সেই পরিস্থিতিতে শোনা যায় শর্মিলা ঠাকুরের নাম। শর্মিলা ঠাকুর তখন থিয়েটারে নাচ করতেন। সত্যজিত রায়ও শর্মিলা ঠাকুরের মেধার কথা শুনে ছিলেন। তাই ছবির ব্যাপারে শর্মিলা ঠাকুরের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এভাবেই শর্মিলা হয়ে উঠেন অপর্ণা।
বলিউডের পদ্মভূষণপ্রাপ্ত অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, “আজও আমার জীবনে মাইলস্টোন হয়ে আছে ‘অপুর সংসার’। আমার সিনেমাজগতে আসা মানিকদার (সত্যজিৎ রায়) হাত ধরেই। মানিকদার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। ওনার মোট পাঁচটা ছবিতে অভিনয়ও করেছি।”
এ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাতকারে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, আবৃত্তি আর সিনেমা, এই দুটো জিনিস বাবার কাছ পেয়েছি। তবে ফিল্ম লাইনে নাম লেখাবো, এমনটা তখনও ভাবনার সীমারেখাতেও ছিল না, কারণ নিজেকে নিয়ে খুবই হীনমন্যতায় ভুগতাম। এমন বেঢপ চেহারা মানুষকে কে ফিল্মে নেবে! সেই ধারণা পাকাপোক্ত হয় সত্যজিত রায়ের অডিশন থেকে রিজেক্ট হওয়ার পরে। সত্যজিৎ রায় নতুন সিনেমা বানাবেন, ‘অপরাজিত’ তার নাম। এক সহকারীর মাধ্যমে তিনি আমার খোঁজ পেলেন। আমাকে দেখেই পথের পাঁচালীর পরিচালক বলে উঠলেন, ‘আরে না না, তোমার তো বয়স বেশী মনে হচ্ছে, তোমাকে দিয়ে চলবে না!’
কিন্তু যখন ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রটির নির্মাণে হাত দিলেন তিনি, তখন আবার আমার ডাক পড়লো। এবার আর ফিরিয়ে দেয়া নয়, একেবারেই কেন্দ্রীয় চরিত্র। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
৬০ বছর পুরোনো সিনেমা ‘অপুর সংসার’। অথচ এখনও শর্মিলা ঠাকুরের নিষ্পাপ চেহারাটা যখন পর্দায় ভেসে উঠে আর সিগারেটের প্যাকেটে তার লিখে দেয়া ‘খাওয়ার পরে একটা করে-কথা দিয়েছো’ তখন অনেকেরই সেই টিনএজ সময়ের রোমান্টিসিজম ভর করে। এখনও অপু হতে চায় অনেকে।