মাতৃত্ব কোন পেশা নয়: প্রিয়তি
প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ২০:৫২
বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত মিস আর্থ ইন্টারন্যাশনাল মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি এখন বাংলাদেশ বা দেশের বাইরে কোন অপরিচিত মুখ নন। তিনি প্রায়ই ফেসবুকে তুলে ধরেন বিভিন্ন সম্ভাবনা-আশা আর প্রিয়-অপ্রিয় কথা। কথা বলেন নারী-শিশু অধিকার নিয়ে। কাজ করেন প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিয়ে।
মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি এবার কথা বলেছেন মাতৃত্ব নিয়ে।
প্রিয়তি বলেন, মাতৃত্ব কোন পেশা নয়। আমার ছোট্ট জ্ঞান থেকে আমি যতটুকু জানি এবং গুগল থেকেও আমরা যা জানি, তাহলো, পেশা হচ্ছে যা আপনার জীবিকা নির্বাহ করে, যার জন্য আপনার বিশেষ দক্ষতা লাগবে আবার অনেক ক্ষেত্রে আপনার শিক্ষা, অভিজ্ঞতা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার ট্রেইনিংও প্রয়োজন পড়ে। ঐ পেশা থেকে আপনি চাইলে অবসর নিতে পারেন অথবা আপনার পেশা পরিবর্তনও করতে পারেন জীবনের তাগিদে।
আমাকে কি কেউ বলতে পারবেন মাতৃত্ব এর সাথে উপরের কথাগুলো কোন ভাবে মিলানো যায় কিনা ?
আজও যখন বাংলাদেশ থেকে কোন ফোন আসে এবং জিজ্ঞেস করে কেমন আছি, আমার উত্তর যদি এমন হয়, শারীরিকভাবে ভালো আছি কিন্তু বাচ্চাদের নিয়ে খুব স্ট্রেস এ আছি, উনাদের উত্তর হয়, কি আর করবা, জন্ম দিয়েছ, মা হয়েছ, একটু কষ্ট তো করতেই হবে।
ওহ হ্যালো, আমি এইগুলো তো জানি। আমি তো আশা করছি না যে, আপনারা আরেকজন এর বাচ্চাদের পালবেন। যা আশা করি, তা হল সহমর্মিতা, করুণা বা উপেক্ষা নয়।
উনারা এতোটুকু বোঝার ক্ষমতাই রাখেন না যে, স্ট্রেস যে এক মানসিক যন্ত্রণা, তা নিজ ও নিজের কর্মস্থল সহ বাচ্চাদের উপরও প্রভাব পড়ে। তারও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে, ব্রেক এর দরকার আছে বাচ্চাদের কাছ থেকে। অনেকেরই আশেপাশে খালা-ফুফু, দাদা-দাদি নাই যে তাদের কাছে গিয়ে বাচ্চারা আবদার/দুষ্টমিগুলো করবে, অ্যাটেনশন পাবে বা কিছুক্ষণ তাদের দেখে রাখবে অথবা অসুস্থ হলে তাদের খাবারগুলো তৈরি করে খাওয়াবে বা স্কুলে নিয়ে যাবে অথবা বাচ্চারা অসুস্থ হলে সারা রাত জেগে থেকে পরের দিনও বাকি সব কাজ বাদ দিয়ে একটু ঘুমাবে। কর্মজীবী মায়েদের পরেরদিন হয়তো কাজে যেতে হয় নতুবা সংসারের পুরুষেরা হয়তো অপেক্ষা করতে থাকেন, কখন ফ্রেশ রান্না হবে এবং খাবেন। তার জন্য মায়েদেরকে কি বেতন দেয়া হয়? তাহলে পেশা হল কিভাবে?
জানি, কেউ কারও পথে চলেন না। প্রত্যেক এর পথ ভিন্ন। কিন্তু আরেকজন এর পথ উপলব্ধি করাটাও জরুরী। জ্বী, মা জন্ম দিয়েছেন বলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সন্তানের দায়িত্ব আর যত্ন করেই যান, এইটা তার চাকুরী নয়, ভালোবাসা ! সহমর্মিতা পাক আর না পাক তিনি তার দায়িত্ব ঠিকই চোখ বুঝে পালন করে যাবেন। কিন্তু মা হয়েছেন বলে তার এইগুলো করতেই হবে, এই কথা বলে যখন মায়ের কাজের চাপগুলো উড়িয়ে দেয়া হয়, তখনই হয় মায়ের সত্যিকারের অসম্মান।
মডেলিং ও অভিনয় জীবনে প্রিয়তি অর্জন করেছেন অনেক স্বীকৃতি ও পুরস্কার। তার মধ্যে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে ইন্টারন্যাশনাল রানওয়ে কুইন্স রিকগনেশন অ্যাওয়ার্ডসে পুরস্কৃত হন আলোচিত্র এ মডেল।
এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে মিস ইউনিভার্সাল রয়্যালটি ২০১৩, আয়ারল্যান্ডে মিস আয়ারল্যান্ড ২০১৪, মিস হট চকোলেট ২০১৪, মিস ফটোজেনিক ২০১৪, সুপার মডেল অব দ্য ইয়ার ২০১৪, মিস আয়ারল্যান্ড আর্থ ২০১৫ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় মিস আর্থ হিসেবে প্রথম রানার-আপ ২০১৬, মিস কমপ্যাশনেট ২০১৬, মিস বেস্ট গাউন ২০১৬, মিস ফিটনেস ২০১৬ নির্বাচিত হয়েছেন।