মস্তিষ্কে কোনো লিঙ্গবৈষম্য নেই
প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০১৭, ২০:১৯
ছেলেদের বুদ্ধি বেশি, নাকি মেয়েদের। এ তর্ক বহুদিনের। কিন্তু এবার বোধহয় যাবতীয় লিঙ্গবৈষম্য সংক্রান্ত ধারণা ছুড়ে ফেলে দেওয়ার সময় এসেছে। এমন এক তথ্য উঠে এসেছে, যা শুনলে খুশি হবেন যে কোনও প্রগতিশীল ব্যক্তি। ‘ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স'-এর একটি গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, মস্তিষ্ককে আলাদা করে পুরুষ বা স্ত্রী বলা যায় না। তাই এখন থেকে একটু অন্যভাবে ভাবার দরকার মানুষের দেহের সবথেকে জরুরি অংশটি নিয়ে।
যাঁরা স্নায়ুবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেন, কিংবা যাঁরা ‘জেন্ডার স্টাডি' নিয়ে পড়ছেন, তাঁদের প্রত্যেকের জন্যই এই তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যেখানে সবসময়ই যৌনাঙ্গের তফাৎ বা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়, সেখানে মানুষের মস্তিষ্কের কথা উঠলেই কার বুদ্ধি বেশি বা কম তা নিয়ে তর্ক হতে থাকে। কিন্তু বিষয়টা একেবারে ভিন্ন। মস্তিষ্কের গঠন কিংবা ব্যবহারের পরিবর্তনগুলোর মাধ্যমেই বিজ্ঞানীরা বেশি করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, মাথার কোনও লিঙ্গভেদ নেই। তফাতগুলো আলাদা। যাঁরা বায়োলজিক্যাল পুরুষ, তাঁদের ক্ষেত্রে যে শুধুই সমাজনির্মিত পুরুষের বৈশিষ্ট্য থাকবে, তা একেবারেই নয়।
তেল-আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাফনা জোয়েলের বক্তব্য, ১৪৪০ জন মানুষের উপর পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গঠন বা সাড়া দেওয়ারও খুব একটা তফাত নেই মানব মস্তিষ্কে। লিঙ্গভেদে মাথার গঠনের পার্থক্য হয় কি না, সেটা দেখাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। কতটা শ্বেত বস্তু বা কতটা ধূসর বস্তু, তা দেখা উদ্দেশ্য ছিল না। দাফনার মত, “আমরা যে সারাক্ষণ ছেলেমেয়ের তফাত করতে থাকি, এই লেখা প্রকাশ পেলে এটা হয়তো বন্ধ হবে।”
শিকাগো মেডিক্যাল স্কুলের স্নায়ুবিদ বিজ্ঞানী লাইস এলিয়ট সায়েন্স ম্যাগাজিনে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘এই গবেষণাই প্রথম''।
মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে খুব কম অংশই পাওয়া গিয়েছে যাকে তথাকথিত অর্থে ‘পুরুষ' বা ‘স্ত্রী' বলে অ্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে।
যদিও সেই অর্থে পুরুষ মস্তিষ্ক বা স্ত্রী মস্তিষ্ক বলে কিছু হয় না। রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রুস ম্যাকওয়েন সরাসরি এই কাজটির সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু তিনি ম্যাগাজিনের লেখার পাণ্ডুলিপিটি প্রস্তুত করেন। এই গবেষণা অন্য দিগন্ত খুলে দেবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মহিলাদের জন্য আরও এক নতুন পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি এই কাজকে।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন