বাশিস’র বিরুদ্ধে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০১৭, ২৩:৩২
ভুলেভরা সিলেবাসে গাইড ও সহায়ক বই ক্রয়ের নির্দেশনা দিয়ে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা শিক্ষক সমিতি (বাশিস)’র বিরুদ্ধে প্রায় ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বিতরণকৃত সিলেবাসে মূলবইয়ের ইউনিটকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা প্রকার বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্যানুসন্ধান করে জানা গেছে, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি তালা উপজেলা শাখার প্রণীত চলতি ২০১৭ সালের পাঠ পরিকল্পনায় ৯ম শ্রেণির অর্ধ বার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার রিডিং টেস্টে মূলবইয়ের ইউনিটকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকার নিষিদ্ধ গাইড বইয়ের মডেল প্রশ্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এনসিটিবি’র নির্দেশনা অনুযায়ী কোনভাবেই পাঠ্যপুস্তক ছাড়া বিকল্প হিসেবে গাইড বইয়ের মডেল প্রশ্নের কথা উল্লেখ করা যাবে না। কিন্তু এসবের কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই তালা উপজেলা বাশিস নেতৃবৃন্দ ইচ্ছে খুশি মতো সিলেবাস তৈরি’র মাধ্যমে অন্তত ২২ হাজার শিক্ষার্থী’র কাছে প্রতিটি ১২ টাকা মূল্য হারে বিক্রি করে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া এম,এ মতিন রচিত সহায়ক বই বই Learner’s Communicative English Gramar and Composition (লারনার্স কম্যুনিকেটিভ ইংলিশ গ্রামার এন্ড কম্পোজিশন) কিনতে বাধ্যতামূলক করিয়ে ৫ লক্ষধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এদিকে শিক্ষক সমিতি’র সিলেবাসে নির্দেশনা অনুয়াযী এসব সরকার নিষিদ্ধ গাইড ও সহায়ক বই সরবরাহ করার জন্য পাটকেলঘাটা জননী লাইব্রেরি মালিক শিক্ষক মিহির বিশ্বাস স্বঘোষিত টেন্ডার নিয়েছেন। তিনি সরকার নিষিদ্ধ সহায়ক বই ৪৫৬ টাকা মূল্য হিসেবে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের নিকট বিক্রি করছেন। ভুলে ভরা ওই সিলেবাসে the Greed dog (অর্থ দাড়ায় একটি লোভ কুকুর) আসলে হবে The Greedy dog, Honest এর স্থলে Hionest, frend এর স্থলে firvends, Historicel এর স্থলে Histrical, Compulsory এর স্থলে Compvlsiry, Writing এর স্থলে Wering সহ অসংখ্য বাক্যের বানান ভুল করা হয়েছে।
বাংলা আবশ্যিক প্রথম পত্রের অর্ধবাষিক পরীক্ষায় গদ্যাংশে অভাগীর স্থলে অভাগীয়, সহপাঠ উপন্যাসে কাকতাড়ুয়ার স্থলে কাকতাড়ায়া, বাংলা ব্যাকরণ অংশে দূষণ এর স্থলে দূর্ষণ।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মাধ্যমিক, নিম্ম-মাধ্যমিক এমপিও-ননএমপিও মিলে ৭০টি মতো বিদ্যালয় রয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে এসব বিদ্যালয় গুলোতে ২৩ হাজার ৭’শ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এরমধ্যে পাটকেলঘাটা আর্দশ এবং আমিরুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়া সব বিদ্যালয় বাশিস’র অর্ন্তভুক্ত।
বিদ্যালয় দুটির প্রধান শিক্ষককের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে প্রায় ১ হাজার ৭’শ শিক্ষার্থী ছাড়া সকল শিক্ষার্থী সমিতি’র প্রণীত সিলেবাসের নির্দেশনায় সহায়ক বই কিনতে বাধ্য হয়েছে। এতে সমিতি’র নেতৃবৃন্দ অন্তত ৮ লক্ষাধিক হাতিয়ে নিয়েছে এমন অভিযোগ অভিভাবক মহলের।
সমিতি’র সভাপতি ও দলুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন হালদার এর কাছে জানতে চাওয়া হলে আংশিক ভুলের কথা স্বীকার করে খুব তাড়াতাড়ি সংশোধন করা হবে বলে জানান। তবে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আতিয়ার রহমান জানান, ভুল হলে সংশাধনের ব্যবস্থা করা হবে। পাঠ্য বইয়ের ইউনিটকে বাদ দিয়ে সরাসরি গাইড বইয়ের মডেল প্রশ্ন বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ প্রতিনিধি’র প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।