বগুড়ায় মাদ্রাসা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা
প্রকাশ | ২১ মার্চ ২০১৭, ০৩:২২
বগুড়ার গাবতলী তরফসরতাজ সিনিয়র (স্নাতক) ফাজিল মাদ্রাসায় কোচিং না করায় ৮ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসরুম থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ১৯ মার্চ (রবিবার) সকাল ১১টায় মাদ্রাসায় অভিভাবকরা এসে একত্রিত হলে ব্যাপক হট্টগোল সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এতে করে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গাবতলী তরফসরতাজ সিনিয়র (স্নাতক) ফাজিল মাদ্রাসায় গভর্নিং বর্ডির সভাপতি ফজলুল হক ও অধ্যক্ষ ইসমাইলের নির্দেশে দীর্ঘদিন আগে থেকে সহকারী অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম কোচিং ব্যবসা চালু করেছে। মাদ্রাসায় সকাল ৮টা থেকে কোচিং করানো হয়। যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী মাদ্রাসায় কোচিং করে না তাদেরকে ১৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) ক্লাসরুম থেকে বের করে দেয়া হয়। এছাড়াও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাদের পছন্দমত গাইড বই কিনতে ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্য করে। তাদের পছন্দের গাইড বই না কিনে অন্য গাইড বই ক্রয় করলে তাদের কাছ থেকে তা কেড়ে নেয়া হয়। এমনকি জেডিসি পরীক্ষায় তাদের ফেল করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণী ছাত্রী তাজমিন সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা গত বৃহস্পতিবার মাদ্রাসায় ক্লাস করার জন্য এলে ভাইস প্রিন্সিপাল জহুরুল ইসলাম আমাদেরকে ক্লাস রুম থেকে বের করে দেন। কারণ আমরা মাদ্রাসার কোচিং এ পড়ি না।
একই ক্লাসের অন্যান্য ছাত্রীরা বলেন, আমরা মাদ্রাসায় কোচিং না করলে আমাদেরকে ফেল করে দেয়া হবে। যারা মাদ্রাসার কোচিং এ পড়ে জেডিসি রেজিষ্ট্রেশন জন্য তাদের কাছ থেকে ৩’শ টাকা নেয়া হবে ও যারা কোচিং করে না তাদের কাছ থেকে ৪’শ টাকা আদায় করা হবে। না দিলে রেজিষ্ট্রেশন করতে দেয়া হবে না। মাদ্রাসায় বাধ্যতামূলকভাবে কোচিং করতে হবে বলে চাপ সৃষ্টি করা হয়।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসায় ভাইস প্রিন্সিপাল জহুরুল ইসলাম সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসার কোন ছাত্র-ছাত্রীকে ক্লাস রুম থেকে বের করে দেয়া হয়নি। কিংবা কোচিং করার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন তিনি।
মাদ্রাসায় কোচিং করানোর কোন বিধান আছে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন বলেন, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তে ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো ফলাফলের জন্য মাদ্রাসায় কোচিং করানো হয়। তবে তা বাধ্যতামূলক নয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার টিএম আব্দুল হামিদ বলেন, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোচিং ব্যবসা সরকারিভাবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও অবৈধ।