সুফিয়া কামাল হলে ছাত্রী নির্যাতন, ছাত্রলীগ নেত্রী বহিষ্কৃত
প্রকাশ | ১১ এপ্রিল ২০১৮, ১৩:৫৭ | আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮, ১৪:০৮
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের কয়েকজন ছাত্রীকে ১০ এপ্রিল দিবাগত রাতে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান এর নেতৃত্বে এই নির্যাতন চালানো হয়েছে এমনই অভিযোগ হলের অন্যান্য ছাত্রীদের।
এই ঘটনার জের ধরে রাতেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইফফাত জাহান এশাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেয়া হয়। একই সঙ্গে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হলের সাধারণ ছাত্রীরা জানান, ১০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দিবাগত রাতে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী মোর্শেদা খানমকে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর করেন ইফফাত জাহান। এছাড়া আরো কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রুমে ঢুকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আহত অন্য ছাত্রীদের মধ্যে আছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শারমীন সুলতানা কনা, গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের আফিফা আকতার রিমু ও ভূতত্ত্ব বিভাগের রিতু আক্তার। এর মধ্যে মোর্শেদার অবস্থা গুরুতর, এই ঘটনায় তার পা কেটে গেলে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে তিনি তার আত্মীয়ের বাসায় চলে যান।
সাধারণ ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই আন্দোলনকারী ছাত্রীদের কক্ষে নিয়ে মারধর করে আসছিলেন ইফফাত জাহান। তবে নির্যাতনের শিকার ছাত্রীরা ভয়ে কাউকে কিছু বলেননি। কিন্তু গতকাল মধ্যরাতের ঘটনার পর হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা সবাই কক্ষ থেকে বের হয়ে হলের মূল ফটকসহ ভেতরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে ইফফাত জাহানকে বহিষ্কারের দাবিতে স্লোগান দেন।
এদিকে ছাত্রী নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে দিবাগত রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে হাজারো শিক্ষার্থী কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে জড়ো হন। তারা কোটা সংস্কারের পক্ষে এবং এশার বহিষ্কার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী ঘটনাস্থলে আসেন। সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, আবাসিক শিক্ষকেরা ছাত্রীদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন। অভিযোগ ওঠা ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানও ইফফাত জাহানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
ইফফাত জাহানকে বহিষ্কারের খবর জানার পর হলের সামনে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা ভোররাত চারটার দিকে কক্ষে ফিরে যান।