ঢাবিতে ফজিল্লাতুন্নেছা ট্রাস্টের স্বর্ণপদক-বৃত্তি প্রদান

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০১৭, ২৩:৫৭ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০১৭, ০২:০৩

অনলাইন ডেস্ক

২০১৫ সালের স্নাতক সম্মান পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফল অর্জন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদভুক্ত ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী নাসরিন আক্তার “বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল স্বর্ণপদক” লাভ করেছেন।

এছাড়া, বিভিন্ন বিভাগের ৫জন ছাত্রীকে “বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল মেধা বৃত্তি” প্রদান করা হয়েছে।

বৃত্তিপ্রাপ্তরা হলেন- মুক্তা চৌধুরী (উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ), ফারজানা নূর সায়মা (একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ), ইসমত আরা (উর্দু বিভাগ), শায়লা আক্তার (ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ) এবং মোছাম্মৎ পারুল আক্তার কেয়া (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ)।

৮ আগস্ট ২০১৭ মঙ্গলবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কৃতী ছাত্রীদের হাতে স্বর্ণপদক ও বৃত্তির চেক তুলে দেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৫ই আগস্টে মর্মান্তিক হত্যাকা-ের ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের প্রতি এবং দেশের ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু ঘাতকরা সেদিনই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শনকে হত্যা করার লক্ষ্যে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বিবেক হচ্ছে সবচেয়ে বড় আদালত। বিবেক থাকলে আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। মানুষ হিসেবে আমরা চলাফেরা করছি কিন্তু আমাদের বিবেক কাজ করবে না-এটা হতে পারে না।
বঙ্গমাতা প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের বিবেক ছিল অসাধারণ। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সহযোদ্ধা। তাঁর আত্মপ্রত্যয়ী, দৃঢ়চেতা, বুদ্ধিদীপ্ত ও দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরামর্শ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে জটিল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করেছে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘসময় জেলে বন্দী অবস্থায় তার পরিবার, দেশ কারো খোঁজ নিতে পারতেন না। এমন সংকটময় সময়ে বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করেছেন। তার পরিবারকে দেখাশোনা করেছেন। কখনো হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েননি। স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপোসহীন নারী। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি তার ঘরের আসবাবপত্র পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছেন এমন নজিরও আমাদের সামনে আছে। উপাচার্য বঙ্গমাতার জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কৃতী ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান। পরিশেষে তিনি স্মারক বক্তা রবীন্দ্র চেয়ার অধ্যাপক মহুয়া মুখোপাধ্যায়কে তাঁর বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানান।

“আমার মুক্তি আলোয় আলোয়” শীর্ষক বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মারক বক্তৃতায় রবীন্দ্র অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায় উনিশ শতককে বাংলার নারী জাগরণের যুগ এবং বিংশ শতককে নারীর আত্মপ্রতিষ্ঠার যুগ হিসেবে উল্লেখ করেন। একইসাথে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি মেয়েদের বিভিন্ন ভূমিকার বিষয় উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক শাহানা নাসরীন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকিয়া পারভীন।

সূত্র: বাসস