মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই
প্রকাশ | ২৫ মে ২০১৬, ২২:৪৯
গত ডিসেম্বরে রাঙামাটির প্রোজেক্ট এর কাজ থেকে বান্দরবান যাই ঘুরতে। যখন পৌঁছাই তখন অন্ধকার হয়ে গেছে। হোটেলে যাওয়ার পর জানতে পারি পৌরসভা নির্বাচন এর কারণে পর্যটকরা শুধু পরদিন সন্ধ্যা পর্যন্তই থাকতে পারবে। তাই সাথেসাথেই রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম শহর ঘুরে দেখতে। রিকশাচালক আমাদের নিয়ে গিয়েছিল শহরের ভেতরেই একটি বৌদ্ধ বিহারে। আমি ভেতরে গিয়ে অবাক হয়েছিলাম এই কারণে যে সেই বিহার এর নাটমন্দিরের অংশটুকু পুরোটাই ছিল এয়ারকন্ডিশনড। দামী টাইলস আর প্রাচুর্য্যের আলোকসজ্জার ভিড়ে সেখানে বুদ্ধের দর্শন খুঁজে পাওয়া ভার হয়ে গিয়েছিল। তাই দ্রুতই চলে আসি।
পরদিন যখন সিএনজি রিজার্ভ করে আমরা ৬টি স্পট দেখার জন্য বের হই তখন সেই তালিকায় স্বর্ণমন্দিরও ছিল। প্রথমে পাহাড় কেটে বানানো ভাঙা সিঁড়ি দেখে ভাবছিলাম একদম গহীন অরণ্যে জ্যোতির্ময় বুদ্ধকে দেখা যাবে এবার, কিন্তু ঘোর কাটে সিঁড়ি ভেঙে প্রধান গেটে যাওয়ার পর। স্বর্ণ মন্দিরেও চিড়িয়াখানা, শিশুপার্কের মতন টিকেট কেটে ঢুকার ব্যবস্থা করেছেন অনাহারে অর্ধাহারে মানুষকে ভালবেসে জীবন কাটিয়েছিলেন যে বুদ্ধ, তার অনুসারীরা। ১০টাকায় টিকিট কেটে সেখানে ঢুকতে হয়! যার ১০ টাকা দেবার সাধ্যি নেই তার ঐ বুদ্ধের দর্শনেরও অনুমতি নেই! অনেকেই হয়তো ভাববেন, ১০ টাকা তো খুব বেশি টাকা নয়। কিন্তু কম বেশি এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়। একটি উপাসনালয়ে কেন টাকা দিয়ে ঢুকতে হবে এই ব্যাপারটিই আমার বোধগম্য হয়নি। কারো বোধগম্য হলে জানাবেন। যদি বলেন, মন্দিরের উন্নয়নের জন্য, সেক্ষেত্রে সব উপাসনালয়েই দানবাক্স থাকে, আর ভক্তরা সেখানে স্বেচ্ছায়ই দান করেন। একজন খুশি হয়ে বুদ্ধের জন্য, তার অনুসারীদের জন্য ১০০টাকাও দিতে পারেন। কিন্তু বুদ্ধের দর্শন পেতে হলেই কেন টাকা দিয়ে আসতে হবে আমার প্রশ্নটা সেখানেই। এ তো বুদ্ধেরই অপমান। ছোটবেলায় ‘ছোটদের গৌতম বুদ্ধ’ নামে বই পড়েছি। কী অসাধারণ সব গল্প ছিল সব! সারাজীবন জেনে আসলাম, বৌদ্ধ কোন ধর্ম নয়, গৌতম বুদ্ধের দর্শন মাত্র। বুদ্ধ নিজেই নিজেকে ঈশ্বর কিংবা তার অবতার বলে অস্বীকার করেছেন, অস্বীকার করেছেন কোন ঈশ্বর উপাসনাকেও। অথচ তার অনুসারীরাই এখন তাঁকে ঈশ্বর আখ্যা দিয়ে মূলতঃ ব্যবসা করছেন।
এই কথাগুলো কেন বলছি? বলছি কারণ বান্দরবানের থানচির না খেয়ে থাকা মানুষগুলোর কথা হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না, কিংবা চোখের সামনে এলেও এড়িয়ে যান। নীলগিরি যাওয়ার সময় বলেছিলাম, যে জীবনে নীলগিরি যায়নি, সে সৌন্দর্যের কিছুই দেখেনি; আর যে নীলগিরি গিয়েছে কিন্তু যাওয়ার পথে দুইপাশে পাহাড়ি মানুষগুলোর দুর্দশা দেখেনি, অনুভব করেনি, সে আসলে অন্ধ, কোন সৌন্দর্য দেখার যোগ্যতাই তার নেই। সারাবছর এতো এতো মানুষ বান্দরবান বেড়াতে যান, এতো টাকা খরচ করেন, বৌদ্ধবিহারগুলোতে এতো এতো টাকার বাহার, আর এই মানুষগুলো কিনা না খেয়ে মরছে? কারো কি কিচ্ছু যায় আসে না? অহিংসার বাণী প্রচার করা, মানুষের মধ্যে শান্তির বাণী প্রচার করা বুদ্ধ তাঁকে ঘিরে নির্মিত প্রাসাদ আর এর বাইরে মানবতার এই বিপর্যয় দেখে কি করতেন কে জানে!
অবশ্য ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে অন্যরাও কম যান না। ইসকনের কোন হোটেলে খেয়েছেন কেউ কখনো? মনে করুন আপনি সেখানে ভাত, ফুলকপির তরকারি, বাঁধাকপির তরকারি, সয়াবিন তরকারি অর্ডার দিলেন। অর্ধেক খাওয়ার পর আপনার মনে হলো এই সব খাওয়া সম্ভব না। আপনি যে সয়াবিন তরকারি এখনো ছুঁয়ে দেখেননি সেটা ফেরত দিতে চাইলেন। লাভ নেই। শ্রীকৃষ্ণের নামে উৎসর্গ হয়ে গেছে, ফেরত নেয়া যাবে না বলে তারা আপনাকে সেটা গছিয়ে দিয়ে যাবে। আপনি খান কিংবা না খান, পুরো টাকাই আপনাকে দিতে হবে। এরকম ব্যবসা চলে আরো অনেক জায়গায়।
আমার বাবা আস্তিক ও ধার্মিক মানুষ। আমাদের পাড়ায় নিজের গুরুদেবের নামে তিনি আশ্রমও বানিয়েছেন একটি। এই আশ্রম আর তার কীর্তনকে কেন্দ্র করে বহু মানুষ বহুদিন আমাদের বাসায় খেয়েছে, রাতে থেকেছে। কিন্তু আমার বাবা যখন এই আশ্রমকে কেন্দ্র করে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় খুলতে চাইলেন তখন ধর্মের নামে মুখে ফেনা তোলা এদের কাউকেই আর পাওয়া গেলো না। আমার বাবা যখন তার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কিছু জমি বিক্রির হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে দেনায় পড়ে গেলেন তখনো এদের কাউকে পাওয়া গেলো না। সর্বশেষ আমার মায়ের বিয়ের গয়না বিক্রি করতে হয়েছিল। একটা মিথ্যে অভিযোগে যখন আমার বাবার চাকরি ছিনিয়ে নেয়া হয়, আর একজন বাঙালি মধ্যবিত্তের মতো তিনি তার হৃত সম্মান পুনরুদ্ধার এর জন্য দীর্ঘদিন লড়াই করে গেলেন আমি তখন প্রত্যেক নতুন ক্লাসে উঠার সময় এক সেট পুরনো বইয়ের জন্য ভিখারির মতো কারো বাসার গেটে দাঁড়িয়ে থাকতাম। খাতার বদলে লিখতাম কাকুর দোকানে বিভিন্ন প্রোডাক্টের যে পোস্টার দিয়ে যেতো সেগুলোর পেছনে। সেই দুর্বিষহ সময়েও এই মানুষগুলোর কাউকেই আমরা পাশে পাইনি। কিন্তু আর্থিক অবস্থা ঠিক হয়ে যাওয়ার পর এই মানুষগুলোই আমার বাবাকে সাধু সাধু বলে মাথায় তুলে নেচেছে। এই মানুষের ধর্ম!
এখন পর্যন্ত আমি আমার লেখার পেছনে হয়তো ভালই জনসমর্থন পাবো। কারণ যাদের বিরুদ্ধে লিখছি এরা কেউ সংখ্যাগুরুর দলে পড়ে না। অবশ্য সংখ্যাগুরু শব্দটা উচ্চারণ করলে অনেকেই আবার ক্ষেপে যান। অনায়াসে দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই সংখ্যালঘু শব্দটি ব্যবহার করতে পারলেও সংখ্যাগুরু ব্যবহার করলে কেন কারো গা জ্বলে আমি ভেবে পাই না। সত্যি বলতে এই সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরুর তত্ত্বই আমার মাথায় ঢুকে না। তাই যারা মানুষকে সংখ্যালঘু নাম দেয়, তাদের উদ্দেশ্যেই আমি সংখ্যাগুরু শব্দটি ব্যবহার করি। এবার তাদের কথায়ই আসি।
আমি আমার বাসার সামনের গলিতেই প্রায়ই এক বিদেশী নারী ও পুরুষকে দেখি রিকশায় করে যেতে। হয়তো এখানেই কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরী করেন। পুরুষটির পরনে থাকে শার্টপ্যান্ট, নারীটি ফতুয়া, কামিজ সাথে প্যান্ট এরকম কিছু পরেন। গতকাল একটা মুভি দেখেছি যার শুটিং হয়েছে লিবিয়ায়। সেখানে আমেরিকান এক নারীও লিবিয়ায় গিয়ে মাথায় কাপড় দিয়ে ঘুরেছেন। শুধু এই মুভি না, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গাতেই দেখেছি মুসলিম দেশগুলোতে ইউরোপ আমেরিকার কেউ গেলে তারা সেখানেও মাথায় কাপড় দেন, ফেসবুকে এটাকে অ্যাপ্রিশিয়েটও করতে দেখেছি আমি অনেককে। এখন আমার প্রশ্ন হলো, আপনার দেশে আসলে আপনার সংস্কৃতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে যদি তারা মাথায় কাপড় দেন, আপনার দেশের মানুষের মতো পোশাক পরেন, তাহলে তাদের দেশে তারা তাদের নিয়মকানুনের জন্য আপনাকে নেকাব খুলতে বললেই সেটা নিয়ে সারা বিশ্বে হৈচৈ শুরু করে দেয়ার কারণ কি? তখন কেন এটা আগ্রাসন হয়ে যায়? আর আপনি যদি মনেই করেন সেই দেশের সংস্কৃতি আপনার সাথে যায় না, তাহলে আপনার তো উচিত হবে নিজের সংস্কৃতির সাথে মেলে তেমন কোথাওই চলে যাওয়া।
শাবিপ্রবিতে যখন সিলেটিদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধার দাবি করা হলো, সিলেটি হয়েও আমি এর প্রতিবাদ করেছিলাম। কারণ আমার মনে হয়েছিল আমরা কেবল সংখ্যায় বেশি বলে, কিংবা আমাদের এলাকা বলে অতিরিক্ত সুবিধা নেবো এটা আসলে আমাদের নিজেদেরই অপমান। কিন্তু অবাক হয়ে দেখি যখন সংখ্যাগুরুরা নিজেরা সংখ্যায় বেশি বলেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের পক্ষে তালিয়া বাজান। তুরস্ক কিংবা ভারতের কথা বাদ দিলাম, ছোট্ট একটা দেশ নেপাল, যার কিনা ৮১.৩% হিন্দু তারাও হিন্দু প্রতিক্রিয়াশীলদের রগরগে চোখ এড়িয়ে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের বজায় রাখে। অথচ এই দেশে শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতার বদৌলতে এই সুবিধাটুকু পেতে সংখ্যাগুরুদের কারো কি নিজেকে অপমানিত মনে হয় না? জানতে ইচ্ছা হয়। (রাষ্ট্রধর্ম কেন থাকা উচিত নয় সেটা নিয়ে আমার অন্য লেখা আছে, রাষ্ট্রধর্ম থাকলে সমস্যা কি সেটা না বুঝলে ঐ লেখা পড়েন কিংবা আরো বিজ্ঞজনের লেখা পড়েন। এখানে আমি নতুন করে এটা নিয়ে আলাপ করতে চাই না) কিন্তু এই এরাই যখন ইউরোপ আমেরিকায় পাড়ি জমান, তখন অন্য সেক্যুলার রাষ্ট্রে থাকলে তাদের কারো ধর্ম যায় না। কিন্তু নিজের দেশ সেক্যুলার হয়ে গেলেই তারা মনে করেন ইসলাম গেলো!
মুসলিম ছাড়া নাকি কেউ শহীদ হয় না। কারণ শহীদ মানেই হলো আল্লাহর পথের শহীদ। এই থিওরি একাত্তরে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, গোবিন্দ চন্দ্র দেব এর মতো এবং আরো অসংখ্য নাম না জানা মানুষেরা যে কেন জানতো না? জানলে অন্তত বেঘোরে প্রাণ হারাতে হতো না। ৪৫ বছর পর তারা আদৌ শহীদ কিনা এটা নিয়েই বিতর্ক হবে জানলে তারা হয়তো দুঃখেই আত্মহত্যা করতেন।
ছোটবেলায় স্কুলের সামনে একটা দোকান ছিল। চিড়ার লাড্ডু খুব পছন্দের জিনিস ছিল আমার। প্রতিদিন স্কুল শেষে ১টাকা দিয়ে ৪টা চিড়ার লাড্ডু কিনে সেটা খেতে খেতে বাসায় ফিরতাম। সেই দোকানের লোকটিকে আমি কখনো জিজ্ঞেস করিনি হিন্দু নাকি মুসলিম, সেও আমাকে জিজ্ঞেস করেনি। অথচ প্রতিদিন ৪টা চিড়ার লাড্ডু দিয়ে আমাদের মধ্যে একটা সুন্দর মেলবন্ধন হয়ে গিয়েছিল। বাজার থেকে যখন আলু পটল কিনে আনেন জিজ্ঞেস করেন কোন বাড়ির আলু? হিন্দু নাকি মুসলিম? যে ডিম খান সেই ডিম হিন্দু বাড়ির মুরগির নাকি মুসলিম বাড়ির? হাসপাতালে অপারেশন করান, রক্ত কি হিন্দুর নাকি মুসলিম এর? এই সবকিছু বাদ দিলাম। যে কোরান শরীফ কিংবা গীতা, ত্রিপিটক, বাইবেল বাসায় যত্ন করে রেখেছেন সেটা কম্পিউটারে মুদ্রণ, ছাপাখানায় ছাপা হওয়া, সেখান থেকে বিভিন্ন শহরে যাওয়া, সেই শহর থেকে একেক দোকানে সেখান থেকে আপনার ঘরে, আপনি নিশ্চিত এই বিশাল চক্রে যাদের শ্রম তাদের একজনও ছিল না যে আপনার ধর্মের নয়? যে মসজিদে মন্দিরে প্রার্থনায় যান সেই উপাসনালয় নির্মাণে যাদের শ্রম তাদের একজনও কি ছিল না যে অন্য ধর্মের? তাহলে নির্মাণের পরেই কেন সেটা বিধর্মীদের জন্য অপ্রবেশ্য হয়ে যায়?
আমার বন্ধু তালিকায় সম্ভবতঃ একজনও পাওয়া যাবে না যে পিকে মুভি দেখে নাই। আর সবার দৃষ্টিতেই পিকে অসাধারণ মুভি নিঃসন্দেহে। কিন্তু এই মুভি এই দেশের সংখ্যাগুরুদের নিয়ে বানাতে গেলে কি হাল হতো ভাবছি। আর সে দেশে যেমন একজন ‘খান’ করেছেন, সেরকম এই দেশে কোন ‘চক্রবর্তী’ করতে গেলে তার কিংবা তার পরিবারের তথা পুরো দেশে হিন্দু সমাজের উপর কি অবস্থা হতো ভাবতেই গা শিউরে উঠছে। সবাই পিকে মুভি দেখলো, কিন্তু তার যে শিক্ষা সেটাই নিলো না।
ধার্মিকেরা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের যে স্রষ্টাকে নিয়ে এতো গর্ব করেন, আজ সেই স্রষ্টার ধর্ম তাদের কাছে এতই ঠুনকো হয়ে গেছে যে এই বিশাল বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের একটি ক্ষুদ্র সৌরজগতের ক্ষুদ্র একটি গ্রহের ক্ষুদ্র একটি দেশের ক্ষুদ্র একটি শহরের, ক্ষুদ্র একটি মানুষের লেখায় তার অবমাননা হয়ে যায়, আর দলবেঁধে সবাই সেটাকে রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন! যে ঈশ্বরে এতো আস্থা রাখেন, যাকে বিশাল শক্তিবান ক্ষমতাবান বলেন, সেই ঈশ্বর ও তার ধর্ম একজনের সামান্য লেখায়, সামান্য বলায় ছোট হয়ে যান, এটা ভেবে আপনি নিজেই নিজের স্রষ্টা আর ধর্মকে ছোট করেন কিনা ভেবে দেখেছেন?
আজ এতো সব কথা কেন লিখছি? কারণ আজ একটা মানুষের জন্মদিন। ৪০ বছর আগেই তিনি চলে গেছেন। কারণ বেঁচে থাকলে আজ তাঁকেও ধর্ম অবমাননার দায়ে খুন হতে হতো। তাঁকে নিয়েও টানাটানি কম হয়নি। কেউ তাঁকে শ্যামাসঙ্গীতের দিকে টেনে নিতে চেয়েছেন, তো কেউ হামদ-নাত এর দিকে। অথচ মানুষটি কেবল একজন মানুষ ছিলেন যিনি সবকিছুর উপরে কেবল মানুষের কথাই বলেছিলেন। শুভ জন্মদিন নজরুল।
“মানুষেরে ঘৃণা করি’
ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি’ মরি’
ও’ মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর ক’রে কেড়ে,
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে,
পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! মূর্খরা সব শোনো,
মানুষ এনেছে গ্রন্থ; -গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো”