ঘূর্ণিঝড়: বন্দরে পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ
প্রকাশ | ২৯ মে ২০১৭, ১৬:৫৪
উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে চট্টগ্রাম বন্দর ও বহির্নোঙ্গরে পণ্য ওঠা-নামা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সম্ভাব্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম জেলার চিকিৎসক ও নার্সসহ সব স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
২৯ মে (সোমবার) আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলার পর সতর্কতামূলক এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, বহির্নোঙ্গর ও বন্দরের জেটিতে সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে তবে জাহাজ থেকে যেসব পণ্য আগে জেটিতে নামানো হয়েছিল সেগুলো ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরার আগাম প্রস্তুতি হিসাবে জেলার সব উপজেলার সাইক্লোন সেন্টার খুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জেলার সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলার সব চিকিৎসক-নার্সদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় 'মোরা' সোমবার (২৯ মে) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটর দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপূর্ব অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম- কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে ।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৫৪ কিলোমিটার মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রকে ৪ নং নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর এলাকায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’-এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণসহ ঘণ্টা ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।