জীবন যুদ্ধে লড়াই করে খুশি বেগমের হাঁস পালনে সচ্ছলতা
প্রকাশ | ১৫ এপ্রিল ২০১৭, ২৩:৫৮
অভাবের সংসারে বর্তমানে প্রতিদিন আয় হয়, হাতে টাকা থাকে, বেশ ভালো লাগে। হাঁস ও নবগঙ্গা নদীই অভাবের সংসারে আলোর ফোয়ারা- কথাগুলো বলছিলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৪নং হলিধানী ইউনিয়নের নাটাবাড়ীয়া গ্রামের ৪০ বছর বয়সি দরিদ্র গৃহিণী খুশি বেগম। অভাবের সংসারে একটু সচ্ছলতা, তাতেই খুশি- খুশি বেগম। এখন স্বপ্ন দেখেন আরেকটু বেশি, তাও হয়তো পূরণ হবে।
নাটাবাড়িয়া গ্রামের খুশি বেগম হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি এখন অসচ্ছল পরিবার, বেকার নারী ও পুরুষদের কাছে দৃষ্টান্ত। তার আর্থিক সাফল্য দেখে অন্যরাও জীবন যুদ্ধে লড়াই করে বড় হবার স্বপ্ন দেখছেন। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে নিজ উদ্যোগে পরিবারের সহযোগিতায়, এনজিও থেকে লোন নিয়ে মাত্র ১৩০টি হাঁসের বাচ্চা যার প্রতিটি বাচ্চার মূল্য ২৫ থেকে ২৭ টাকা দরে কিনে শুরু করেন হাঁস পালন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৪নং হলিধানী ইউনিয়নের নাটাবাড়ীয়া গ্রামে নবগঙ্গা নদীর পাড়ে বেগমের বাড়ি। প্রাথমিক ভাবে নবগঙ্গা নদীর ধারে ছোট্ট পরিসরে হাঁসের খামার শুরু করেন। নদীতে পর্যাপ্ত পরিমানে খাবার, পানি এবং পরিবেশ ভাল থাকায় হাঁসের বাচ্চাগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পায়। হাঁস পালনের উপর প্রাতিষ্ঠানিক কোন প্রশিক্ষণ না থাকলেও শুধুমাত্র গ্রাম্য পশু চিকিৎসকদের কাছ থেকে পরমর্শ নিয়ে হাঁসের পরিচর্চা করতেন তিনি। বাচ্চাগুলো বড় হবার সাথে সাথে সুচিকিৎসা খাদ্য ও সঠিক পরিচর্চার অভাবে ১৫-২০ টি হাঁস মারা যায়।
তারপরও ২য় বারে নতুন করে ৫০টি বাচ্চা যোগ করেন খামারে, এবার তিনি সাফল্যের মুখ দেখেন।
বর্তমানে বেগমের খামারে ১৫০টি হাঁস আছে, তার মধ্যে ১২০টি মুরগী ও ৩০টি মোরগ। ৩ মাস পরিচর্যার পর থেকেই তার খামেরের হাঁসগুলো ডিম দিতে শুরু করে। প্রথম দিকে অনিয়মিত ডিম দিলেও বর্তমানে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১১০টি পর্যন্ত ডিম দিচ্ছে।
প্রতিটি ডিমের বাজার মূল্য ৮/৯ টাকা। বেগম জানান এই হাঁস পালনের আগে তাদের দিন কাটত অভাব অনটনে। হাঁস পালনে এখন পরিবারে স্বচ্ছলতা এসেছে। সরকারী প্রশিক্ষণ পেলে হাঁস পালন করে অভাবকে জয় করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
খুশি বেগম বলেন, হাঁস পালন করতে তেমন পরিশ্রম হয় না, টাকা ও বেশি ব্যয় হয় না। করতে হয় না তেমন তদারকি। তাদের গ্রামের অনেকেই এখন হাঁস পালন করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন বলে জানান তিনি।