‘বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করুন’
প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৫:৩৮
ব্যবসা বাণিজ্যকে গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। পণ্যের বহুমুখীকরণে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে- বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৮ অক্টোবর (রবিবার) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ৬০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ‘ডেস্টিনেশন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠান থেকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভিসনারি লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শুধু কৃষি নয় শিল্পায়নের দিকেও জোর দেয়া হয়েছে। কারণ, খাদ্যের জোগানের জন্য কৃষি যেমন জরুরি, তেমনি দেশের উন্নয়নে শিল্পায়নের সম্প্রসারণও জরুরি।
বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদনে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণে ‘ডেসটিনেশন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলন থেকে আপনাদের দিকনিদের্শনা আসবে। আমি সেদিকে চেয়ে থাকবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে। এ লক্ষ্যে দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিল্পায়নের জন্য এসব অঞ্চলকে বেসরকারি খাতে দেয়া হবে। এছাড়া কোন এলাকায় বিশেষ কী কী পণ্য উৎপাদন হয় তার ভিত্তিতে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে। যেন উৎপাদিত পণ্য দ্রুত বাজারজাত করা যায়।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ যদি ভোট দেয় তাহলে আবার ক্ষমতায় আসবো। যেসব উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি, সেগুলো এগিয়ে নিতে কাজ করে যাবো। ভোট না দিলেও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করবো।
বেসরকারি খাতকে সুযোগ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। রেডিও, টেলিভিশন, বিমানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি খাতে দেয়া হয়েছে। সবসময় বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করতে চেয়েছি যেন দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়, কারণ বিনিয়োগই পারে দেশকে শক্তিশালী করতে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন: ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দেই। সেই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ করে দেই। বাংরাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। দেশে বিদ্যুৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে, জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে আরো অনেক পরিকল্পনা হাতে নেয়া।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশী বিনিযোগ(এফডিআই) আকৃষ্ট করতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নরে জন্য শেয়ার মার্কেট থেকে প্রায় ৩.৭৫ বিলিয়ন ডলার মূলধন সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে চিন, জাপান, কোরিয়া ও ভারত সরকার বিদ্যুৎ, রেলওয়ে, সেতু, সড়ক, বন্দর, টার্মিনাল এবং টেলিকম সেক্টরে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। বাংলাদেশের অবকাঠামো খাত উন্নয়নের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ৩০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ২০৩০ ও ২০৪১ সালের ভিশন অর্জনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতীম দেশসমূহের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক উন্নয়ন অনস্বীকার্য। এছাড়া BCIM, BBIN, SAARC, ASEAN, BIMSTEC ইত্যাদি কৌশলগত আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সংস্থা ও চুক্তির সাথে সংযুক্ত হলে বাংলাদেশের পণ্যে প্রবেশাধিকার এবং ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশেষত BCIM করিডোরটি বাস্তবায়িত হলে এটি বাংলাদেশকে ASEAN করিডোরের সাথে সংযুক্ত হতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি Mekong-Ganga Cooperation(MGC) এ পর্যটন, সংস্কৃতিক, শিক্ষা, পরিবহন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এসকল উদ্যোগের মাধ্যমে অর্থীতির সকল সূচকে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং দেশীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশ বিনিয়োগের আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত হবে।