খুলনা অঞ্চলে জনপ্রিয় হচ্ছে কাঁকড়া চাষ
প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:৩৮
খুলনা অঞ্চলে কাঁকড়া চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সুন্দরবন থেকে আহরণ করা ছোট কাঁকড়া চাষের দিকে ঝুঁকছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে দেশের কাঁকড়ার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এগুলো তারা রফতানিও করছেন। এতে নিজেরা লাভবান হচ্ছেন, সঙ্গে দেশের রাজস্ব আয়ও বাড়ছে। সম্ভবনাময় এ খাতকে কাজে লাগাতে পারলে দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুন্দরবনের ৪শ’টি নদী ও খাল ২৯০ প্রজাতির মাছের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। এ কারণে মার্চ থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বনজীবীরা অনুমতি নিয়ে সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া আহরণ করেন। কিন্ত আহরণকৃত ছোট আকৃতির এই কাঁকড়া রপ্তানি অনুপযোগী। ফলে চাষের মাধ্যমে আকৃতি বড় করে রফতানির উপযোগী করে তুলছেন চাষিরা।
কয়রার কাঁকড়া চাষি আজমল হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবনের খাল বিলে প্রচুর কাঁকড়া পাওয়া যায়। কিন্তু তা সরাসরি রফতানিযোগ্য নয়।
সুন্দরবন থেকে রপ্তানিযোগ্য কাঁকড়া পেতে গেলে অনেকটা সময় ব্যয় করতে হয়। সে জন্য গভীর বনে যেতে হয়, যা ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সুন্দরবন থেকে ছোট ছোট কাঁকড়া সংগ্রহ করে চাষের মাধ্যমে বড় করে সহজেই রপতানিযোগ্য করা যাচ্ছে। যা এলাকায় ক্রমেই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।’ এ সময় তিনি সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া আহরণ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার দাবি জানান।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের সদ্য বিদায়ী বন কর্মকর্তা মো. সাইদ আলী বলেন, ‘রপ্তানিযোগ্য কাঁকড়া সুন্দরবন থেকে আহরণের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ছোট কাঁকড়া চাষের মাধ্যমে রপ্তানি উপযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগ থেকে বনজীবীরা অনুমতি নিয়ে ৮ হাজার ৭০৪ কুইন্টাল কাঁকড়া আহরণ করেন। কিন্তু সম্ভাবনাময় কাঁকড়ার রফতানি বাড়াতে বিশ্বে নতুন নতুন কাঁকড়ার বাজার সম্প্রসারণ করতে হবে।
খুলনা মৎস্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকার বলেন, ‘জীবিত ও হিমায়িত খাদ্য হিসেবে বিদেশে কাঁকড়া রফতানি করা হয়। সে কারণে এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে কাঁকড়ার চাষ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি হ্যাচারির মাধ্যমে কাঁকড়ার বাচ্চা উৎপাদন করতে হবে।’
খুলনার অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনোয়রুল কাদির বলেন, ‘বিশ্বে কাঁকড়ার বাজার এখন ঊর্ধ্বমুখী। সে কারণে চাষের মাধ্যমে কাঁকড়া বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানির উপযোগী করে তোলা উচিত।