১৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল
প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:১২
চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে ১৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৬ একর জায়গার ওপর পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) নির্মিত হচ্ছে।
এ লক্ষ্যে বিমানবন্দর সড়কের বোট ক্লাবের পাশে ৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এর আগে চলতি বছরের ১৩ জুন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি অনুমোদন করে। কন্টেনার হ্যান্ডলিং প্রবৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে বন্দরের কর্মক্ষমতা বাড়াতে জরুরি ভিত্তিতে নতুন এই টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষ।
বিমান বন্দর সড়কের বিএএফ শাহীন কলেজ গেট থেকে জহুরুল হক ঘাঁটি গেট পর্যন্ত সড়কটি সোজা করার মাধ্যমে ড্রাইডক থেকে বোট ক্লাব পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই টার্মিনাল নির্মিত হচ্ছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্মিতব্য টার্মিনালটি সাগরের কাছাকাছি হওয়ায় বন্দরের বর্তমান জেটির চেয়ে কম সময়ে জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। আবার এনসিটি ও সিসিটির মতো সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজও বার্থিং করতে পারবে।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম খালেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘২০১৯ সালের মধ্যে পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল অপারেশনে যাবে বলে আশা করছি। ফলে আগামীতে বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের সংকট আর থাকবে না।’
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, নির্মিতব্য টার্মিনালে চারটি জেটি হবে। এর মধ্যে ৬০০ মিটার লম্বা তিনটি কন্টেনার জেটি- যেখানে একসাথে তিনটি কন্টেইনারবাহী জাহাজ বার্থিং করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তেল খালাসের জন্য ২২০ মিটার লম্বা একটি ডলফিন জেটিও নির্মাণ করা হবে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ সালে ১৭ লাখ টিইইউস, ২০১৬ সালে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টিইইউস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করেছে বন্দর।
বন্দরের সক্ষমতা অনুযায়ী চলতি ২০১৭ সালে ২৩ লাখ ৬০ হাজার টিইইউএস, ২০১৮ সালে ২৩ লাখ ৭০ হাজার টিইইউএস, ২০১৯ সালে ২৩ লাখ ৮০ হাজার টিইইউএস, ২০২০ সালে ২৩ লাখ ৯০ হাজার টিইইউএস এবং ২০২১ সালে ২৪ লাখ টিইইউস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করতে পারবে বন্দর। কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের এই প্রবৃদ্ধির চিত্র সক্ষমতার চেয়েও বেশি।
বন্দরের তথ্য মতে, ২০১৮ সালে ২৩ লাখ ৯৮ হাজার টিইইউএস কন্টেনার আমদানি-রপ্তানি হবে- যা সক্ষমতার চেয়ে ২৮ হাজার টিইইউস বেশি।
২০১৯ সালে ২৬ লাখ ৪৬ হাজার টিইইউএস কন্টেনার আমদানি-রপ্তানি হবে যা সক্ষমতার চেয়ে দুই লাখ ৬৬ হাজার টিইইউস বেশি।
একইভাবে পরের বছর ২০২০ সালে হ্যান্ডলিংযোগ্য কন্টেনার হবে ২৯ লাখ এক হাজার টিইইউএস- যা বন্দরের বর্তমান সক্ষমতার চেয়ে পাঁচ লাখ ১১ হাজার টিইইউএস কন্টেনার বেশি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী বলেন, ‘দিনের পর দিন আমদানি-রপ্তানির পরিমান বৃদ্ধির সাথে সাথে কন্টেনার আসা-যাওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। এতে সংকট মোকাবেলায় নতুন টার্মিনালটি দ্রুত সময়ের মধ্যেই নির্মাণ সম্পন্ন করতে হবে।’
জুনিয়র চেম্বার চিটাগাংয়ের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমান সরকারের ভিশন-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তাতে আমদানি ও রপ্তানির ভলিউম বাড়বে। যার জন্য নতুন টার্মিনাল নির্মাণ অপরিহার্য। এজন্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে বন্দরের পদক্ষেপ ইতিবাচক বলে মনে করি।’
সূত্র: বাসস